- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

বাংলার সাধারণ গ্রামীণ মানুষ এখনও জানেন না নয়া কৃষি বিল-এর ক্ষতিকর দিকগুলি কী কী

শমীক সরকার। কলকাতা। ১২ ডিসেম্বর, ২০২০।#

নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আজ প্রায় ১৬ দিন হয়ে গেল দিল্লিতে অবস্থান বিক্ষোভ করছে পঞ্জাব ও হরিয়ানা তথা উত্তর ভারতের কৃষকরা। এর আগে তারা নিজ নিজ রাজ্যে বিক্ষোভ করেছে দুমাস ধরেসেপ্টেম্বরে যখন এই আইন দুটি পাশ করানো হয় লোকসভা ও বিধানসভায় – সেই সময় থেকেই। আজ সকালে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানা থেকে আমরা সাইক্লিস্টরা তাদের সমর্থনে এবং এই বিল তিনটির আশঙ্কার দিকগুলি প্ল্যাকার্ডে লিখে গড়িয়ানেপালগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটজুলপিয়াবারুইপুর — মোট ৪৪ কিমি শহর সংলগ্ন গ্রামীন এলাকা পরিক্রমা করলাম। রাস্তায় অগণিত মানুষ অত্যন্ত কৌতুহলী হয়ে প্ল্যাকার্ডের লেখাগুলো পড়লনিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করলআমাদের জিজ্ঞাসা করতে শুরু করল — কী ব্যাপার। আমরা যতটা পারলামবললামকী ব্যাপার। একটা ব্যাপার দেখলামরাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ হচ্ছেএকটা ভারত বনধ হয়ে গেছেএখানে শাসক ও বিরোধীদের একটা বড়ো অংশ কৃষক আন্দোলন সমর্থন করছে — কিন্তু বাংলার সাধারণ গ্রামীণ মানুষ এখনও খুব একটা জানেন না এই বিলএর ক্ষতিকর দিকগুলি কী কী। তবে অনেকেই সবে জানতে শুরু করেছেন।

কৃষিবিল নিয়ে কৃষকদের সাথে আলাপচারিতার উদ্যোগ। ছবি প্রতিবেদক সূত্রে।

নেপালগঞ্জের সাপ্তাহিক হাটে এক ভ্যানচালক আমাদের কাছ থেকে একটি প্ল্যাকার্ড সংগ্রহ করে তার ভ্যানে টাঙিয়ে নিলেন। একজন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করা এবং কয়েক বিঘে ধানজমির মালিকচাষি উত্তম বৈরাগী সাইকেলে আমাদের কাছে এগিয়ে এসে একটি পোস্টার নিয়ে নিলেনগলায় ঝুলিয়ে নিলেন। তিনি বললেনএই আইন সম্পর্কে গ্রামের চাষিরা ওয়াকিবহাল নয়কিন্তু উনি শুনেছেনএবং বিপদটা বুঝেছেন। উনি এমনও বললেনকলকাতায় যখন মিছিল হবেউনি দলবল নিয়ে আসতে পারেন। নেপালগঞ্জ হাটএ থিকথিকে ভিড়তার মধ্যে দিয়ে যাবার সময় একজন আমার সাইকেলের সামনে ছোট্ট প্ল্যাকার্ডে চাষি বনাম …” লেখা দেখে বলল, “চাষি বনাম কর্পোরেট”বোড়াল ছাড়িয়ে একজন দেখে বলল, “চাষি বনাম ডট কম?”। একজন চায়ের দোকানী অবশ্য আমাদের প্রশ্ন করলেনএখানকার চাষিরা যখন কিছু বলছে নাআমরা কেন ওপরপরা হয়ে চাষিদের কথা বলছি। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলামচাষিরা কি জানেআইনে কী আছেআমরা জানাতে চাই বলেই এই আইনের ক্ষতিকর দিকগুলি লিখে নিয়ে বেরিয়েছি। প্রসঙ্গতঃএই ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছে চাষিরাইযারা আজ আড়াই মাসের ওপর আন্দোলন করছে পঞ্জাব হরিয়ানা দিল্লিতে।

উদ্যোগটি ছিল তাৎক্ষণিক এবং ছোটো। আশেপাশের গ্রামীন মানুষদের প্রতিক্রিয়া এবং তাদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়েছে কমবেশি সব সাইক্লিস্টই। আমি যে সমস্ত সংলাপে ছিলাম বা লক্ষ্য করেছিসেটুকু এটুকুই।