- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

কোথাও লেখা ‘মুখোশ হল মুখ বন্ধ করে দেওয়ার হাতিয়ার’, কোথাও লেখা ‘নিউ নরম্যাল = নিউ ফ্যাসিজম’

 

বার্লিনে প্রতিবাদের ছবি। মিলি মুখার্জির ফেইসবুক ওয়াল থেকে।

বার্লিনে ৩৮ হাজার মানুষের জমায়েতে ভাষণ দিলেন রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। বললেন বিল গেটস ‘বিশ্ব স্বাস্থ্যের একনায়ক’। তিনি গোটা দুনিয়াকে ‘সর্বগ্রাসী নজরদারি রাষ্ট্রে’ পরিণত করার পরিকল্পনা করেছেন। দুর্নীতিগ্রস্থ বৃহৎ ওষুধ সংস্থাগুলো স্পনসরশিপে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গোটা দুনিয়ার ক্ষমতা দখল করেছেন। এটা উদার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত। গোটা দুনিয়ার শাসক শ্রেণি অতিমারির নামে একটি ‘সুবিধাজনক সংকট’ তৈরি করেছে। যার সমস্ত নীতি তারাই ঠিক করছে। এর পেছনে রয়েছে গোটা দুনিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা। তার বক্তব্যে সরবে সমর্থন জানাল জনতা। শুধু বার্লিন নয়, লকডাউন তুলে দেওয়া এবং মুখোশ পরার বাধ্যবাধকতার বিরোধিতা করে ইউরোপ জুড়ে পথে নামল হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ল বার্লিন, প্যারিস, ভিয়েনা, জুরিখ ও কোপেনহেগেনে।

 

জার্মানির বার্লিনের শান্তিপূর্ণ মিছিল ও প্রতিবাদ অশান্ত হয়ে ওঠে যখন কয়েকশো প্রতিবাদী জার্মানির সংসদ রাইখস্ট্যাগে জোর করে ঢুকতে চান। পুলিশের সঙ্গে তাদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। গ্রেফতার করা হয় শ’খানেক প্রতিবাদীকে। তারা সকলেই ছিলেন অতি দক্ষিণপন্থী রেইখবার্গার সংগঠনের সদস্য। তাদের হাতে ছিল নাৎসি প্রতীক।

জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেন জার্মানিতে নাৎসি প্রতীক ও পতাকার কোনো স্থান নেই। তার আগে সকালেও ২০০ জন অতি দক্ষিণপন্থী বিক্ষোভকারী গ্রেফতার হয়। তারা পুলিশের দিকে পাথর ও বোতল ছুঁড়ছিল।

ইউরোপের অন্যান্য শহরের বিক্ষোভগুলিরও মূল বক্তব্য ছিল ‘করোনা ভাইরাস ভাঁওতা ছাড়া কিছু নয়’।

 

লন্ডনের প্রতিবাদ

লন্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হন। সমস্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পাশাপাশি মোবাইলের ফাইভ জি টাওয়ার স্থাপনেরও বিরোধিতা করা হয়। প্রতিবাদীদের বক্তব্য, ওই টাওয়ারগুলি মানুষের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। কোথাও লেখা ‘মুখোশ হল মুখ বন্ধ করে দেওয়ার হাতিয়ার’, কোথাও লেখা ‘নিউ নরম্যাল = নিউ ফ্যাসিজম’, ‘চিকিৎসার নামে অত্যাচার বন্ধ কর’, আরেকটায় লেখা ‘ভ্যাকসিন নিতে বাধ্য করা চলবে না’।


 

ইতালি তো প্রথম থেকেই করোনার মির্কিনি ষড়যন্ত্র বুঝে গিয়েছিল , সেখানকার সাংসদ তো বিল গেটসের বিরুদ্ধে মামলা করারও অনুরোধ করেছেন তাদের সরকারের কাছে । কিছুদিন আগে বেলজিয়ামেও লকডাউন অপ্রয়োজনীয় বলা হয়েছিল এবং কোভিড মৃত্যুর বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করে ১৩৩ জনের মৃত্যুর ঘটনাটি করোনার তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। – ছবি ও তথ্য মিলি মুখার্জির সৌজন্যে প্রাপ্ত।

করোনা অতিমারিকে চক্রান্ত বলে প্রথম থেকেই প্রচার চালিয়ে আসছেন সেলিব্রিটি এবং প্রাক্তন ফুটবলার ও ধারাভাষ্যকার ডেভিড ইকে। ওই সভায় বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এখানে জড়ো হয়েছি কারণ একটি মারণ মহামারি দুনিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটা কোভিড ১৯ নয়, সেটা হল ফ্যাসিবাদ”।

 

প্যারিসের প্রতিবাদ

প্যারিসে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের সমস্ত প্রকাশ্য স্থানে মুখোশ পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে ফরাসি সরকার। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এক শান্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ৩০০ প্যারিসবাসী। দ্রুত তাদের ঘিরে ধরে পুলিশ। যারা মুখোশ পরেনি, তাদের থেকে ১৩৫ ইউরো করে জরিমানা নেয় তারা।

তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। সেগুলির কয়েকটিতে লেখা ছিল ‘মিথ্যা বলা বন্ধ কর’। সমাজতত্ত্বের পড়ুয়া অ্যানেইস বলেন, “রাস্তায় মুখোশ পরার কার্যকারিতা সম্পর্কে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, কোভিড ১৯ কোনো কঠিন অসুখ নয়, কেবল ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের জন্যই এটি বিপজ্জনক”।


পিপল্স্ ম্যাগাজিনে (peoplesmagazine.in) এ প্রকাশিত ৩১ অগাস্ট, ২০২০ এর খবর অনুযায়ী