- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

দিন দশ হল খোল করতাল বাজিয়ে মোটামুটি কিছু রোজগার হচ্ছে

বিষ্ণুহরি দাস একাই এক হাতে খোল, আর অন্য হাতে করতাল বাজিয়ে হরেকৃষ্ণ নাম গেয়ে প্রতিদিন দোরে দোরে ভিক্ষা করেন। কোনো দাবি করেন না। যে যা দেয় হাসি মুখে হাত জোড় করে নমস্কার করে নিয়ে নেন। পূর্ব মেদিনীপুরের ইটাবেরিয়ায় ওঁর দেশের বাড়ি। ওঁর মুখে শুনলাম ওঁর এই জীবিকার কথা :  

 জিতেন নন্দী। মেটিয়াবুরুজ। ১৫ নভেম্বর, ২০২০।#
ছবি প্রতিবেদকের তোলা

দেশের বাড়িতে আমার স্ত্রী আর দুই মেয়ে আছে। একজনকে বিয়া দিয়েছি। আর একজন ক্লাস টেনে পড়ছে। তেমন জায়গাজমি আমার নেই, সামথিং। সামথিং মানে পাঁচ-সাত কাঠা, তাতে ধান চাষ হয়। আমন লাগিয়েছিলাম, হয়েছে মোটামুটি। আমি লাগাই, আমার স্ত্রীও লাগালাগি করে। চৈত্রের ৩ তারিখ (১৭ মার্চ) বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। দোল পূর্ণিমার পর। তারপরেই তো লকডাউন হয়েছে। সাত-আট মাস ওখানেই থেকে গেলাম। রোজগার বন্ধ। এই দশদিন হল এসেছি। মোটামুটি কিছু রোজগার হচ্ছে। কালকে বাড়ি যাবার ইচ্ছা আছে। আগে আগে এখানে দশ-বারো দিন থাকতাম। সামথিং রোজগার হয়। তাতে ঠাকুরের দয়ায় কোনোরকম চলে যায়। এখানে থাকি, সেটা খরচা করি আর বাকিটা দেশে নিয়ে যাই। স্ত্রী আছে, মেয়ে পড়াশুনা করছে। আমরা বৈষ্ণব। গুরু হীরালাল দাস অধিকারী। দেশে আমাদের দল আছে, নামগান হয়। বর্তমানে লকডাউনের সময় থেকে সব বন্ধ।

আমি আট-দশ বছর হল এখানে এসেছি। কী করব? আমি আগে দেশে খাটাখাটনি করতাম। লোকের জায়গায় খাটতাম, মাটি কাটতাম। আমার প্যারালাইসিস হল। ডাক্তার বলল, তোমার আর খাটাখাটনি করা চলবে না। কলকাতায় চলে এলাম। এখন থাকি গোপালপুরে (বজবজ রোডের ওপর)। আমি ঢোল আর করতাল একাই বাজাই। না বাজালে জমাট হয় না। এক-একদিন এক-একদিকে যাই। কোনোদিন রবীন্দ্রনগর-সন্তোষপুর, কোনোদিন বেহালায়, ঠাকুরপুকুর পর্যন্ত যাই।