- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

সদ্য কিশোরী চাম্পা-র ‘বিয়ে’ আটকানো গেল না

ফজর আলি, রামচন্দ্রখালি, ১৩ নভেম্বর#

প্রতীকী ছবি, ফারুক-উল ইসলামের তোলা, ২০০৯ সামশেরনগর, সুন্দরবন।
প্রতীকী ছবি, ফারুক-উল ইসলামের তোলা, ২০০৯ সামশেরনগর, সুন্দরবন।

রামচন্দ্রখালি নরেন্দ্র শিক্ষানিকেতনের ক্লাস সিক্সের ছাত্রী গরিব পরিবারের মেয়ে চাম্পা মোল্লার বিয়ে হয়ে গেল গত বৃহস্পতিবার। পাত্র বাসন্তী থানারই আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তালদা গ্রামের ১২-১৩ বছর বয়সী কিশোর।
কয়েকদিন ধরে যখন ছাত্রীটি স্কুলে আসছিল না, তখন তার সিনিয়র, ক্লাস এইটের কিছু ছাত্রছাত্রী শিক্ষকদের জানায়, চাম্পা-র বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। খুব খারাপ এটা। তাকে যেন স্কুলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে স্কুল থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তা আজ দিন পনেরো কুড়ি আগের কথা। তারা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে। প্রধান শিক্ষক প্রথমে ব্যবস্থা নিতে রাজি হলেও, স্কুলের কিছু শিক্ষক বলে, এই ব্যাপারে নাক গলালেই ঝামেলা। তাই শুনে নাকি প্রধান শিক্ষক সরে আসেন। তারপর ছাত্রছাত্রীরা বিডিও-র সঙ্গে গিয়ে দেখা করে।
বিডিও সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে বলে ব্যবস্থা নিতে। প্রধান চাম্পার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু বোঝাতে ব্যর্থ হয়। এরই মধ্যে চাম্পার বাড়ির লোক জানতে পারে, স্কুল ছাত্র প্রতিবেশি মোজাফফর পুরকাইত এই বিয়ে যাতে না হয় সে ব্যাপারে ইন্ধন দিচ্ছে। আরও আছে একজন, রামচন্দ্রখালির ছাত্রী সাহিনা। এরাই নাকি বিডিওকে বলেছে সব। চাম্পার বাড়ির লোকজন মোজাফফরের বাড়ির ওপর চড়াও হয়। দল বেঁধে এসে তার বাবা-মা কে মারধোরও করার হুমকি দেয়। এ ছাড়াও বলে, গরিবের মেয়ের বিয়ে ভাঙার জন্য মোজাফফরকে রাস্তায় পেলে তারা মেরেই ফেলবে। মোজাফফর বাধ্য হয় এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়ে থাকতে।
একসপ্তাহ পর বিয়ের দিন স্কুলের দাদা-দিদিরা ফের বিডিও-র সঙ্গে দেখা করে। বিডিও তখন নিজে গ্রামে চলে যান এবং গায়ে হলুদের মধ্যেই বিয়ে বন্ধ করে দিয়ে আসে। শুরু হয় মোজাফফারের বাবা-মার ওপর অত্যাচার। বিডিও তখন মোজাফফারের বাবা-মাকে বলেন, অফিসে এসে দেখা করতে। কিন্তু বাবা-মা সেখানে গিয়ে অফিসারের দেখা পায়নি।
ওদিকে রাতারাতি রাজনৈতিক নেতাদের ধরাধরি করে চাম্পার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।