- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

‘যোগেশদা আমার থেকে সন্মানদক্ষিণা নিতেন না, তাই আমিও কোচবিহারে আর্থিক সঙ্গতিহীনদের নিয়েই কাজ করি’

বিকর্ণ,৭ই জানুয়ারী,২০১৫#

আনন্দমের ছোট শিল্পীরা
আনন্দমের ছোট শিল্পীরা

নতুন বছরের প্রথম রবিবারে ৪ঠা জানুয়ারী ছিল কোচবিহার আনন্দম্‌ কালচারাল সেন্টারের ৩৪’তম বর্ষপুর্তি উৎসব। অনুষ্ঠান শুরু হল চার্লি চ্যাপলিনের ১২৫ ত জন্মবার্ষিকীর স্মরণে চ্যাপলিন অভিনীত –‘সার্কাস’। সন্ধ্যেবেলায় সন্মানজ্ঞাপন করা হল রবীন্দ্রভবনের সামনের চা বিক্রেতা মণিশঙ্কর দেবনাথ, বাদাম বিক্রেতা নিরঞ্জন দে, রবীন্দ্রভবনের অস্থায়ী কর্মী বাবলু সরকার, অরুন সরকার, নৃপেন রায় আর দেবজ্যোতি দাসকে। তারপর মূল অনুষ্ঠানে ছিল সুকন্যা দত্তগুপ্তের নির্দেশনায় বাল্মিকী প্রতিভা, শ্রীশংকর দত্তগুপ্তের নির্দেশনায় ‘পিটার দি গ্রেট’ এবং ‘আজও নিরুপমা’। ৬ জানুয়ারী সন্ধ্যায় শ্রীশংকর দত্তগুপ্তের সাথে এই আনন্দম্‌ নিয়ে কথাবার্তা বলতে গিয়েছিলাম।

আজকের এই আনন্দম্‌ কালচারাল সেন্টার ৩৫ বছর আগে কিভাবে শুরু হয়েছিল?

তুমি তো সারা ভারতে ঘুরেছ আনন্দমের টীম নিয়ে…

তুমি যাদের নিয়ে কাজ করছ তারা তো তথাকথিত ভাবে পিছিয়ে পড়া ঘর থেকে আসা?

দীপক চক্রবর্ত্তীর সাথে কোথায় আলাপ?

দীপকবাবুর কি জন্ম থেকেই সমস্যা?

মূক ও বধীর শিল্পী দীপক চক্রবর্ত্তী
মূক ও বধীর শিল্পী দীপক চক্রবর্ত্তী

তোমাদের এখন সদস্যসংখ্যা কত?

এখন যারা কাজ করছে তাদের কোথা থেকে পেলে?

আর হ্যাঁ যা বলছিলাম আমাদের এখানে এখন যারা কাজ করছে রিয়া যেমন আছে ওর বাবা কাঠের কাজ করে, ঠাকুমা লোকের বাড়িতে কাজ করে, অর্কর বাবা নেই, শ্রীবাসের বাবা চানাচুর বিক্রি করেন, শুভজিতের বাবা বেসরকারি কর্মী, প্রিয়াঙ্কা হচ্ছে রিয়ার দিদি, রোহিত আলির বাবা গ্যারেজে কাজ করেন, রোহিতের সাথে এবারে আমরা ওর মাকেও নিয়ে এসেছি জোহরা বেগম। এই যে সায়ন্তন সেনগুপ্ত ২৮ বছরের যুবক কিন্তু mentally challenged  তার মনের বয়েস ৫ বছর, তার চলন ফেরন ৪-৫ বছর বয়েসীদের মত কিন্তু আমাদের সঙ্গে আমাদের নাটকে কাজ করছে। আশুতোষ পাল পোষ্ট অফিসে কাজ করছে, ও আর অঙ্কন ৫ বছর বয়েসে আমাদের সাথে এসেছিল। আশুতোষ এখন সম্পাদক। মধুমিতা চক্রবর্ত্তী ছোটবেলায় এখানে এসেছিল পরবর্তীতে আশুতোষের সাথে তার বিয়েটাও হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা পরিবারের মত হয়ে গিয়েছি। দীপা বর্মন বলে আমাদের গ্রুপে একটি মেয়ে আছে, যার জীবনটা বড় অদ্ভুত। যেহেতু ওর মা কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাই ওর শ্বশুরবাড়ি থেকে ওনাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই মেয়েটা আমাদের গ্রুপে কাজ করছে, ওর মা হাতের কাজ করে শৌখিন জিনিসপত্র বানিয়ে বিক্রি করেন। দীপা কিন্তু প্রত্যেকবছর ক্লাসে ফার্স্ট হয়, এবছর নাইনে উঠল। এই যে বাচ্চাগুলো আছে তারা কিন্তু রেজাল্ট খুব ভালো করে। আমাদের এখানে শর্তই আছে ৬০% এর বেশী নম্বর পেতে হবে, ফেল করলে বাদ, ফলে এরাও জানে আমাকে রিহার্সাল করে গিয়ে পড়তে হবে। বিভিন্ন জায়গায় এরা perform  করছে, সারা ভারতে program  করেছে। এই তো কালকে কুশমন্ডি যাচ্ছি, এরপর জলপাইগুড়িতে তিনদিন ব্যাপী মূকাভিনয় উৎসব। সেখানে শেষদিন শেষ অনুষ্ঠান আমাদের।

এই ৩৪ বছরের অভিজ্ঞতা কিরকম?

 

দীপক চক্রবর্ত্তীর সাথে শংকর দত্ত গুপ্ত
দীপক চক্রবর্ত্তীর সাথে শংকর দত্ত গুপ্ত