- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

‘বোড়ো জাতির ছাত্ররা রাও (কথা) করে না। আমরা রাও করতে চাই’

রামজীবন ভৌমিক ও শঙ্খজিৎ দাস, ২৮ ডিসেম্বর#

সাইমণি মারদি-র ছবি রামজীবন ভৌমিকের তোলা। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪
সাইমণি মারদি-র ছবি রামজীবন ভৌমিকের তোলা। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

চেংমারি ক্যাম্পে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সাইমনি মারদির সঙ্গে কথোপকথন।
— গণ্ডগোল কবে থেকে শুরু হল?
— মঙ্গলবার। ২৩ তারিখ। একটা বড়ো নদীর ওইপাশে কাটাকাটি লাগছে। ঘর জ্বালাই দিছে। বেঙ্গল দিকে ছোটো নদী আছে। আমরা বেঙ্গল দিকে পালাইছি। সিমলাবাড়ি থাকি চেংমারি আসতে বুক জল। ঘোরামারা দিয়া নৌকা দিয়া পার হওয়া যায়। কিন্তু ওদিকে বোড়ো জাতির মানুষ আছে। আমরা কাঁথা কাপড় নিয়া হাঁটিয়া নদী পার হইছি।
— বোড়ো জাতির লোক সাঁওতালদের আক্রমণ কেন করে?
— কী জানি? এখন কেন করে? কে বলতে পারবে? এখান (আসাম) থেকে আমাদের হঠাইতে চায়।
— গণ্ডগোল ছাড়া অন্য সময় তোমাদের সাথে মিল থাকে?
— না মিল থাকে না। আমরা একসাথে স্কুলে পড়ি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে বোড়ো জাতির ছাত্ররা রাও (কথা) করে না। আমরা রাও করতে চাই। …
— মাস্টারমশাই তোমাদের আদর করে? ভালো করে পড়ায়?
— মাস্টারমশাই আমাদের আদর করে না। ভালো করে আমাদের পড়ায় না। সব মাস্টারমশাই বোড়ো জাতির আছে। সাঁওতাল একটাও মাস্টারমশাই নাই। তোমাদের জাতির একটা মাস্টার আছে। বোড়ো জাতির মাস্টারগুলো বোড়ো ভাষায় ওদের ভালো করে কয়ে (বুঝিয়ে) দেয়। আমাদের কয়ে না। তোমার জাতির মাস্টার ভালো বুঝায়।
— তোমাদের বইয়ের ভাষা কি বোড়ো?
— না, অ্যাসামিজ।
— তোমরা কি ওদের সাথে মিলেমিশে থাকতে চাও?
— ওরা আমাদের সাথে থাকতে চায় না। ওরা জমিতে কাজের জন্য, নিজের দরকার জন্য কথা বলে। আমাদের দরকার হলে বলে না। এক সাথে রাস্তা দিয়া যাইলে এরকম (কনুইয়ে গুঁতোর ইশারা করে) ধাক্কা করে।
— রাও না করা, ধাক্কা করে কথা করা কবে থেকে হইছে?
— আমার জন্ম থাকি। বড়ো হইয়া থাকি এরকম।