- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

‘বৈঠা ২৫’ স্মরণে মননে

প্রশান্ত প্রসূন, কোচবিহার,  ৮ জুলাই#

boitha

আজকের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর সুন্দর সহজ মুদ্রনের রমরমার যুগেও হাতে লেখা সাহিত্য পত্রিকা — ‘বৈঠা’ কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সীমান্ত অঞ্চলের গীতালদহ থেকে ২৮ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসছে। স্থানীয় নদী বুড়াধল্লা থেকে যাত্রা শুরু করলেও তার লক্ষ্য গঙ্গা ছুইয়ে পদ্মা হয়ে আলোর সমুদ্দুরে পাড়ি দেওয়া …।
৫ জুন ২০১৪ ওকরাবাড়ি আলাবকস উচ্চবিদ্যালয়ে বৈঠার রজত জয়ন্তী বর্ষে তাকে স্মরণীয় করতে ‘বৈঠা — ২৫’ শীর্ষক এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বৃক্ষ রোপনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন ড. আনন্দ গোপাল ঘোষ, প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও মুক্তিযোদ্ধা সরোজ দেব, বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. নিখিলেশ রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কবি রাম অবতার শর্মা, অমিত কুমার দে, ড. দীপক কুমার রায়, ড. জাফর ওয়াজেব, হরিপদ মণ্ডল, মতিউর রহমান, রামেশ্বর রায় এবং আরো অনেকে।
‘বৈঠা ২৫’ বিশেষ সংখ্যার উদ্বোধন করেন কবি সরোজ দেব। এদিন বৈঠা সম্মাননা জানানো হয় কবি সরোজ দেব, কবি অমিত কুমার দে, সাংবাদিক কৌশিক সরকার, শিক্ষক বিশ্বনাথ দেব প্রমুখদের। এছাড়াও ‘বৈঠা ২৫’ অভিনন্দন জানানো হয় রেডিও শ্রোতা ও লেখক মতিউর রহমান, চিত্রশিল্পী রথীন্দ্রনাথ সাহা লেখক সাংবাদিক সুমন মণ্ডল ও মঈনউদ্দিন চিশতিকে।
স্বাগত ভাষণে বিশ্বনাথ দেব উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বৈঠার অন্তরিত প্রচেষ্টার দীর্ঘ যাত্রার কথা তুলে ধরেন। উদ্বোধক আনন্দ গোপাল ঘোষ বলেন, ‘হাতে লেখা পত্রিকার ইতিহাসে বৈঠা এক বিরল দৃষ্টান্ত। হাতে লেখা পত্র পত্রিকায় হাত লাগিয়েছেন অনেক লেখক কবি সাহিত্যিক। কিন্তু তার স্থায়িত্ব বেশিদিন নয়। কিন্তু বৈঠা পাঁচিল পার করেছে।
বৈঠা শুরুর দিকের অনেকেই আজ আর নেই, কিন্তু তাদের লেখা রয়ে গেছে বৈঠায়, সম্পাদকের সুন্দর হাতের লেখায়। কোন প্রশংসাই এর জন্য যথেষ্ট নয়। বৈঠা এক ইতিহাস তৈরি করল। আর সেই ইতিহাসকে রাঙিয়ে তুলতে ওকরাবাড়ি আলাবকস উচ্চবিদ্যালয়ের শিল্প সাহিত্য দরদী মানুষ বিশ্বনাথ দেব এগিয়ে এসেছেন। এভাবেই শিক্ষায়তনগুলো এগিয়ে এলে শিলা সাহিত্যের চর্চা নতুন প্রাণ পাবে। সকল আমন্ত্রিত অতিথিরা বৈঠা নিয়ে তাদের আবেগমথিত কথা তুলে ধরেন ও সুমন মণ্ডলের আলোচনার মধ্যে দিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
শেষে বৈঠা সম্পাদক আমিনুর রহমান জানান, ‘এতদিন একান্তে ভেবেছিলাম, ‘বৈঠা আমার স্বপ্ন, ঘুমোতে দেয়না কখনো’। কিন্তু বৈঠার ডাকে যে ভাবে বৌদ্ধিক মহল থেকে সর্ব সাধারণ আন্তরিক সাড়া দিয়েছেন, তাতে জানলাম বৈঠা আমার একার নয়, বহুজনের স্বপ্ন। আরো ২৫ বছর বৈঠা বাওয়ার প্রেরণা পেলাম। যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, বৈঠা বেয়ে যাব; গেয়ে যাব মনের আনন্দে ভাটিয়ালি গান।’