- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

বেনিয়ম আর টালবাহানার ফাঁসে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের স্বনির্ভরতা প্রকল্প

৩১ আগস্ট, আকড়া, মহেশতলা, জিতেন নন্দী#

নাজনীন সর্দারের ছবি তুলেছেন জিতেন নন্দী।
নাজনিন সর্দারের ছবি তুলেছেন জিতেন নন্দী।

নাজনিন সর্দার

আমি গত বছর ২০১৩ সালে আমি ভর্তি হয়েছিলাম ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ প্যারামেডিকাল টেকনোলজি’-তে। আমার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা ফি নেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল ‘সার্টিফিকেট অন মেডিকাল ল্যাবরেটরি টেকনোলজি’ কোর্স এক বছরের। এক বছর পর পরীক্ষা দিয়ে পাস করলে সার্টিফিকেট এবং ন-হাজার টাকা স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে। আমরা সার্টিফিকেট পেয়েছি। এখন বলা হচ্ছে, ৯০\% অ্যাটেন্ডেন্স থাকতে হবে। নাহলে স্টাইপেন্ড পাবে না। তখন আমাদের অ্যাটেনডেন্স নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। আমাদের সঙ্গে মোট ২৮ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। স্টাইপেন্ড নিয়ে বলতে গেলে আমাদের প্রিন্সিপাল শেখ আসাফাত আলি বলছেন, ৮ সেপ্টেম্বর তোমাদের সল্টলেকে গিয়ে ণ্ণওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফাইনান্স কর্পোরেশন’-এর ডাইরেক্টরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমি একজন প্রতিবন্ধী মেয়ে, হাঁটতে বেশ অসুবিধা হয়। এখানে ক্লাস করতে আসি হাওড়া থেকে। আমাদের পক্ষে কি অতদূরে গিয়ে কথা বলা সম্ভব? প্রিন্সিপাল এখন নানারকম কথা বলছেন। ২০১৪ সালে নতুন ব্যাচ ঢুকেছে। তাদের অ্যাডমিশন ফি নিয়েছে মাত্র ২০ টাকা!

সাদ্দাম শেখ 

ভর্তি হওয়ার সময় আমার কাছ থেকে কোর্সের ১০% হিসেবে পাঁচশো টাকা ফি নিয়েছিল। কথা ছিল, ইসিজি টেকনিশিয়ান কোর্সের শেষে স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে। গত বছর অক্টোবর মাসে স্টাইপেন্ড দেওয়ার কথা ছিল। সামনের অক্টোবরে দু-বছর হবে। স্টাইপেন্ডের কোনো হদিশই পেলাম না। সল্টলেকে সিটি সেন্টারের বিপরীতে WBMDFC-র হেড অফিসে যেতে বলছে। আমার ৯৮% অ্যাটেন্ডেন্স আছে। তাও স্টাইপেন্ড দেবে না। ওরা বলছে, তোমাদের মধ্যে অনেকে একাধিক কোর্সে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যুক্ত রয়েছ। আমার তো সেরকম কিছু নেই। এদের জন্য কি আমরা ভুগব? এই ইন্সটিটিউট চালাচ্ছে ‘ভারত সেবক সমাজ’। ২০০৯ সাল থেকে এই ইন্সটিটিউট চলছে। আমাদের আগের সেশনের ছেলেমেয়েরা স্টাইপেন্ড পেয়েছে। আমরা পাব না কেন?

মুন্সি লিয়াকত হোসেন

২০১৩ সালে যখন আমি ভর্তি হই, তখন একটা নোটিশ করেছিল। তাতে বলা ছিল, কোর্সের শেষে যে স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে, তার ১০% অ্যাডমিশন ফি হিসেবে নেওয়া হবে। কোর্স শেষ হওয়ার পর যথারীতি পরীক্ষা হল, রেজাল্ট পেলাম। তারপর যখন স্টাইপেন্ড দেওয়ার কথা এল, তখন প্রিন্সিপাল সাহেব বললেন, এই ইন্সটিটিউটে কিছু ছাত্র একই সঙ্গে দু-তিন জায়গায় কোর্স করছে স্টাইপেন্ড পাওয়ার জন্য। এইজন্য মাইনরিটি অফিসের ডাইরেক্টর স্টাইপেন্ড দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। হঠাৎ মাঝখানে এসে কীভাবে বন্ধ হল? তিনি বললেন, আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কোনোভাবেই কিছু করা যাচ্ছে না। উনি আমাদের ২০১৩ এবং ২০১৪-র সেশনের ছেলেমেয়েদের ৮ আগস্ট সল্টলেকে যেতে বলছেন। এবার আমরা কী করে সেইসব ছেলেমেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করব? আমাদের তো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ নেই। ওঁকেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এখানে এক্স-রে, নার্সিং, কম্পিউটার ইত্যাদি কোর্স নিয়ে শ-দুয়েক ছাত্রছাত্রী আছে।