- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

বর্ষণে তিল ও বাদাম চাষের ক্ষতি, কচু আর ফুল চাষে লাভ

কামরুজ্জামান খান, মেচেদা, ১৬ জুন#

ছবিতে ওপার বাংলায় পদ্মাচরে বাদাম চাষের ছবি অনিশ্চিত ব্লগ থেকে নেওয়া। এই ব্লগটিতে ওপার বাংলার চাষাবাদের প্রচুর পোস্ট আছে।
ছবিতে ওপার বাংলায় পদ্মাচরে বাদাম চাষের ছবি অনিশ্চিত ব্লগ থেকে নেওয়া। এই ব্লগটিতে ওপার বাংলার চাষাবাদের প্রচুর পোস্ট আছে।

তিনদিনের ভারী বর্ষণে তিল চাষ এবং বাদাম চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল হাওড়া এবং মেদিনীপুর জেলায়। হাওড়া জেলার আমতা থানার জয়পুর ব্লকের খরিয়প গ্রামের চাষি জগন্নাথ কোলে এবং সুবোধ ধাড়ার সাথে কথা হচ্ছিল। জগন্নাথ কোলে বললেন, ইনি পাঁচ বিঘে জমিতে তিল চাষ করেছিলেন। প্রচুর বৃষ্টির ফলে প্রায় আড়াই বিঘে তিল মাঠেই নষ্ট হয়ে যায়। তিল চাষ হয় সাধারণত ফাল্গুন মাসে। কাটা হয় জৈষ্ট মাসে। প্রথমে হাল করে তিল বুনতে হয়। বোনার সময় রাসায়নিক সার দিতে হয়। মাঝে এক খেপ জলও দিতে হয় তিলে ফুল আসার সময়। এবং কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। এক বিঘা জমিতে তিল চাষ করতে খরচ হয় প্রায় দু-হাজার টাকা। এক বিঘে জমিতে তিল ফলে ১২০ কেজি। এক কেজি তিলের দাম চল্লিশ টাকায়। এই বছরে আড়াই বিঘে তিল নষ্ট হওয়ার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি তিল ও বাদাম চাষ করেছিলেন পাঁচ বিঘে জমিতে। বাদাম চাষ হয় মাঘ মাসে। বাদাম তোলা হয় জৈষ্ঠ মাসে। এক বিঘে জমিতে বাদাম চাষ করতে খরচ হয় প্রায় তিন হাজার টাকা। প্রথমে হাল করে মাটি তৈরি করে সার দিয়ে বাদাম বসাতে হয়। এক বস্তা বাদাম বীজের দাম পড়ে দেড় হাজার টাকা। সার লেবার অন্যান্য খরচও পড়ে আরও দেড় হাজার টাকা। এক বিঘে জমিতে একশ পঞ্চাশ কুইন্টাল বাদাম ফলে। এক কুইন্টাল বাদাম বিক্রি করে আড়াই হাজার টাকা পাওয়া যায়। তিল এবং বাদাম গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহজার করা হয়। এখন দু-বিঘে জমির বাদাম জলের তলায় ডুবে গেছে। ফলে বাদাম চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই বছর।
সুবোধ ধারার ১৫ বিঘে জমি আছে। বাদাম এবং তিল চাষ করেছিলেন। তারও অর্ধেক জমির তিল এবং বাদাম নষ্ট হয়ে গিয়েহে জলে। তিনি সাড়ে তিন বিঘে জমিতে কচু চাষ করেছিলেন। কচু চাষ হয় পৌষ মাসে। আর তোলা হয় আষাঢ় মাসে। এক বিঘে জমিতে খরচ হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। এক বিঘে জমিতে প্রায় ১৫ কুইন্টাল কচু ফলে। এক কুইন্টাল কচুর দাম আড়াইশো টাকা। এবছর কচুর ফলন ভালো হয়েছে। পরপর তিন বছর কচু চাষে মোটামুটি ভালোই লাভ পাওয়া যাচ্ছে।
মেদিনীপুররের পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত তিপপুর গ্রামের চাষি কোহিনূর বিবি বলেন, তিনি তিন বিঘে জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। আর এক বিঘে জমির বাদাম জলে নষ্ট হয়ে গেছে। এইভাবে বর্ষার ফলে চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এই বর্ষণের ফলে ফুল চাষিদের অবশ্য আনন্দ হয়েছে। কারণ এই বর্ষার ফলে বেল, জুঁই, রজনীগন্ধা, টগর বেশি পরিমাণে হচ্ছে। ফলে লাভের আশায় তারা দিন গুনছেন।