- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

পস্কো প্রতিরোধ আন্দোলনের ওপর পুলিশ-প্রশাশনের হামলা চলছেই, অভয় সাহু ফের আটক

পিপিএসএস-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে, ১১ মে#
ওড়িশার জগৎসিংহপুর জেলার দখল দক্ষিণ কোরিয়ান কর্পোরেট পস্কোর হাতে চলে গেছে, জেলাশাসক এবং জেলার পুলিশ সুপার এমন ব্যবহার করছে, যেন তারা ওই কোম্পানি এবং তাদের কনট্রাক্টরদের প্রতি দায়বদ্ধ — এমনই ভাষায় অভিযোগ করেছে পস্কো প্রতিরোধ সংগ্রাম সমিতি। তারা একটি আবেদনে জানিয়েছে, গত ৬ মে থেকে জগৎসিংহপুর জেলার গোবিন্দপুর গ্রাম থেকে শুরু করে প্রস্তাবিত পস্কো প্রকল্প পর্যন্ত একটি গহ্বর খোঁড়া শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন এবং সেটাও করা হচ্ছে লুকিয়ে চুরিয়ে। এই নিয়ে পস্কো প্রতিরোধের গ্রামগুলিতে নতুন করে হিংসাত্মক পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আজ ১১ মে সকালবেলা পস্কো প্রতিরোধ সংগ্রাম সমিতির নেতা অভয় সাহুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিরোধ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৫০টি মামলা দিয়েছে প্রশাসন। তাঁকে জগৎসিংহপুরের কুজঙ্গ জেল-এ রাখা হয়েছে। এর আগে ২০০৮ সালেও অভয় সাহুকে জেলে পোরা হয়েছিল ১৪ মাসের জন্য। তারপর ২০১১ সালের শেষের দিকে ৪ মাসের জন্য ফের বন্দী করা হয় তাঁকে।
গত আট বছর ধরে চলা পস্কো প্রতিরোধ আন্দোলনের ওপর পুলিশি নির্যাতন, পস্কোর ভাড়াটে গুণ্ডাদের পীড়ন এবং বোম মেরে আন্দোলনকারীদের মেরে ফেলা — সবই হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ মামলা রুজু করা হয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের ওপর। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে অন্তত ১৫০০ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে, যাদের মধ্যে ৩৪০ জন মহিলা। গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে গ্রামবাসীরা গ্রামের বাইরে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পর্যন্ত যেতে পারে না।

৯ মে প্রায় ৮০০ পুলিশের উপস্থিতিতে ঢাকঢোল পিটিয়েই পস্কো প্রকল্পের পাঁচিল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে গোবিন্দপুর গ্রামে। শয়ে শয়ে গাছ কাটা হয় এর জন্য। গ্রামবাসীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধকে আমল না দিয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনীর মদতে কর্পোরেট আগ্রাসন উৎসাহ পেয়েছে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে। ওড়িশার নিয়ামগিরিতে বক্সাইট মাইনিং হবে কি না, তা ঠিক করার জন্য গ্রামসভাকে দায়িত্বে দিলেও পাশ্ববর্তী খান্দাধার পার্বত্য এলাকায় মাইনিং-এর অনুমতি পেয়েছে পস্কো। সুন্দরগড় জেলার এই পার্বত্য এলাকায় লোহা আকরিকের খননের ওপর ওড়িশা হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি লোধা-র বেঞ্চ ১০ মে একটি রায়ে জানিয়েছে, কেন্দ্র সমস্ত বিরোধিতা খতিয়ে দেখে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিক। পস্কো কোম্পানি এই অর্ডারকে স্বাগত জানিয়েছে, এবং পস্কো ও পস্কোপন্থীদের পালে হাওয়া দিয়েছে এই রায় — এমনই মত পস্কো প্রতিরোধ আন্দোলনের কর্মীদের।