- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে অসরকারি সংস্থার ভূমিকা

এনজিও শব্দটির সাথে আমাদের পরিচয় গত কয়েক দশক আগে থেকে। সংবাদপত্র ও অন্যান্য মাধ্যমের দ্বারা শব্দটি কেবলমাত্র সরকারি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাদবাকি সমস্ত সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই শব্দটি সাধারণত ব্যবহৃত হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বলতে এনজিও শব্দটি ব্যবহার করা হয়। বাংলায় এই শব্দটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বলে উল্লেখিত হয়। ভারতে প্রায় ৭০ হাজার এনজিও আছে, তার মধ্যে কেবল ১০ হাজার এনজিও সমিতি আইনে স্বীকৃত ও নিবন্ধীভুক্ত।
এই এনজিওদের অন্যতম ‘ফাউন্ডেশন ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ সম্প্রতি কলকাতার রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজের মেঘনাদ সাহা অডিটোরিয়ামে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সহ দিল্লি, কলকাতা, নাগাল্যান্ড ও আরও কয়েকটি প্রদেশের এনজিওদের নিয়ে সন্মিলিতভাবে পরিবেশ বিষয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় বক্তাদের বক্তৃতায় যে মনোভাব ও অভিমতের প্রকাশ ঘটছে, তা হল, ১৯৭০ সাল থেকে পরিবেশ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হলেও, ১৯৬৬ সালে কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ ও বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময় ভিয়েতনামের ওপর মার্কিন হানাদার বাহিনীর আক্রমণ চলছে। মার্কিন বিমান হানায় নাপামের আগুনে জ্বলছে ফসলের খেত। বিষাক্ত জীবাণু ছড়িয়ে, গুলি ও বোমার ঘায়ে পঙ্গু করা হয়েছে, নিহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ।
১৯৭২ সালে পরিবেশ নিয়ে এনজিওদের প্রথম বিশ্ব সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে পরিবেশ বিষয়ে আইনের প্রণয়ন হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে শুরু হয় পরিবেশ দিবস পালন। ১৯৮৬ সালের ৫ জুন রাষ্ট্রসংঘ পরিবেশ দিবস হিসাবে ওই দিনটিকে ঘোষণা করে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত পরিবেশ নিয়ে চিন্তাভাবনা, পরিবেশ রক্ষা ও দূষণ মুক্ত রাখার জন্য সচেতন করার উদ্দেশ্যে চলছে প্রচার আন্দোলন, পরিবেশ ও বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য গবেষণা ও উপায় উদ্ভাবন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি উদ্যোগ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রগুলির একক ও সন্মিলিত উদ্যোগে রিওডি জেনিরিতে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলন থেকে কোপেনহেগেন সম্মেলন, কিয়োতো প্রোটোকল পর্যন্ত হলেও এখনও পর্যন্ত কিয়োতো প্রোটোকল কার্যকর হল না। এই বছর ২০১২ এই প্রোটোকলের মেয়াদ শেষ হবে। তবু পরিবেশ চিন্তাভাবনার উদ্যোগ, আন্দোলন চলবে, চলবে গবেষণা-সমীক্ষা নূতন পন্থা ও উপায় উদ্ভাবনের। এই আলোচনা সভায় মূল ভাষণ দেন কলকাতার ‘সায়েন্টিফিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ’-এর নির্দেশক অন্বেষা গুহ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দূষণ পর্ষদের উপদেষ্টা এন বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক অভিজিৎ মিত্র, সান প্ল্যান্ট গ্রুপের মুখ্য ব্যবস্থাপক নির্দেশক এ কে সিং, খ্যাতনামা পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ। স্বাগত ভাষণ দেন ফাউন্ডেশন ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুকুমার হোড়রায়, কলকাতা, ২৮ মে