- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

ন্যূনতম মজুরি দ্বিগুণ করার দাবিতে আন্দোলনে কম্বোডিয়ার পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা, ভয়ে সব কারখানা বন্ধ করল মালিকরা

কুশল বসু, কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর#

২৭ ডিসেম্বর পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের ছবি জিনহুয়া ডট নেট থেকে নেওয়া।
২৭ ডিসেম্বর পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের ছবি

সারা পৃথিবীর মতোই দক্ষিণ এশিয়ার কম্বোডিয়াতে পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা খুবই কম বেতনে কাজ করে। এই বেতন বাড়ানোর জন্য তারা দাবি জানিয়েছিল অনেক দিন থেকেই। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং বাকি বিশ্বের উঁচুদরের শহরগুলোতে শপিং মলগুলোতে শোভা পাওয়া, নামি দামি পোশাক ব্র্যান্ড (নাইকে, অ্যাডিডাস, দু-পন্ত প্রভৃতি) কোম্পানির পোশাক তৈরি হয় বাংলাদেশ, ভারত, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশের পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে। এগুলো হয় আক্ষরিক অর্থেই ণ্ণবিশেষ আর্থিক অঞ্চল’ অথবা বাস্তবত তাই। গত এক বছর ধরেই কম্বোডিয়ার পোশাক শিল্প শ্রমিকদের ইউনিয়নগুলো বেতন (ন্যূনতম মজুরি ছিল মাসে ৮০ ডলার বা ৫০০০ টাকা ভারতীয় মুদ্রায়) বাড়ানোর দাবিতে মিছিল, স্ট্রাইক করছিল। ১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বর তিনদিনের স্ট্রাইক হয় তাই সেঙ বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (সেজ) এবং ম্যানহাটন সেজ-এ। প্রায় ৩৬টি কারখানার ৩৩ হাজার শ্রমিক স্ট্রাইক করেছিল। তারপর পোশাক শিল্পের মালিকরা ঠিক করে, ন্যূনতম মজুরি মাসে ১৫ ডলার করে বাড়ানো হবে, সরকার তা মেনে নেয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানেনি। তারা দ্বিগুণ মজুরির (১৬০ ডলার মাসে) দাবিতে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে।
২৭ ডিসেম্বর কয়েক হাজার শ্রমিক মিছিল করে রাজধানীর একটি সেজ-এ ঢুকতে যায়। শ্রমিক ইউনিয়নগুলি জানায়, এই সেজ-এ শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানাতে ভয় পায়। তাদের সাহস জোগাতেই তারা ওই মিছিলটি এই সেজ-এর মধ্যে ঢোকাতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সেজ-এর সামনে ব্যারিকেড করে দাঁড়িয়ে যায়। শ্রমিকরা ঢুকতে চাইলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। শ্রমিকরাও পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছোঁড়ে। পুলিশ এবং শ্রমিক উভয় পক্ষেই বেশ কিছু মানুষ আহত হয়।
শ্রমিকদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন জানায় প্রধান বিরোধী দল।
শ্রমিকদের এই রণংদেহী মূর্তি দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে প্রায় ৪০০ পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন গারমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন অব কম্বোডিয়া ঘোষণা করে, যতদিন না সরকার এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলি কারখানাগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারছে, ততদিন কারখানাগুলি বন্ধ থাকবে। তারা অবশ্য অনেকদিন ধরেই ‘শ্রমিক আন্দোলন হলে বিদেশি পুঁজি পালিয়ে যাবে’ বলে ভয় দেখাচ্ছিল।