- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

ত্রিলোকপুরীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ : সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মস্থানের কাছে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ‘মাতা কি চৌকি’ বসানো থেকেই গোলমালের সূত্রপাত

শমীক সরকার, কলকাতা, ১৬ অক্টোবর। তথ্যসূত্র টু সার্কেলস ডট নেট এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস#

পিটিআই-এর ছবিতে পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পর শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর টহল।
পিটিআই-এর ছবিতে পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পর শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর টহল।

পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বসতির মধ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়েছে। ত্রিলোকপুরীর ১৫ এবং ২৭ নম্বর ব্লকের সংযোগস্থলে একটি মসজিদের কাছে দীপাবলী উপলক্ষ্যে একটি ‘মাতা কি চৌকি’ বসানো হয়েছিল দিন দশেক আগে। এই গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসা কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মুসলিম বসতিতে ক্ষোভ ছিল।
বৃহস্পতিবার দীপাবলীর রাত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবকদের আতসবাজি পোড়ানো নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তা গড়ায় পরস্পরের দিকে ইট পাটকেল ছোঁড়া অবধি। গুজব ছড়ায়, এলাকার প্রাক্তন বিজেপি এমএলএ নাকি বলেছে, ওই জায়গায় স্থায়ী মন্দির বানানো হবে, যা স্থানীয় মুসলিমদের আরো ক্ষুদ্ধ করে।
শুক্রবার সন্ধ্যেয় দীপাবলী পেরিয়ে যাওয়ার পরও ঠাকুর বিসর্জন দিয়ে ওই চৌকি ওঠানোর কোনো উদ্যোগ না থাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের তরফে এই চৌকি তুলে নেওয়ার দাবি করা হয়। বাদানুবাদ থেকে দুই সম্প্রদায়ের তরফেই একে অন্যের ওপর ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়। পুলিশ গিয়ে জনা দশেককে গ্রেপ্তার করে। তখনকার মতো গোলমাল থেমে যায়।
শনিবার সকাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের চার পাঁচশো যুবক জড়ো হয় এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বসতিগুলো লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়তে শুরু করে, গালাগাল দিতে শুরু করে, সন্ত্রাসবাদী এবং দেশদ্রোহী বলে আওয়াজ তোলা শুরু হয়। এতে মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবকরাও পালটা ঢিল ছুঁড়তে শুরু করে এবং বিকেল চারটের সময় গোলাগুলি বিনিময় শুরু হয়। অন্তত চারজন গোলাগুলি বিনিময়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। দুপুরবেলায় একটি কাপড়ের দোকানে আগুন দেওয়া হয়। একটি গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রয়াস বানচাল করে দেয় পুলিশ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিনিধি সহ অনেকেই ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবত করার জন্য দিল্লির প্রশাসক লেফটেনান্ট গভর্নরকে আবেদন জানায়। পুলিশ এইদিন অন্তত ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার রাতের খবর, অবশেষে ত্রিলোকপুরীতে ১৪৪ ধারা এবং কার্ফু জারি হয়েছে। এলাকা এখনও অগ্নিগর্ভ।
ত্রিলোকপুরী একটি পুনর্বাসন কলোনি। এলাকার আশি শতাংশ মানুষ দলিত, অর্থাৎ নিচুজাতের হিন্দু। অন্তত পনেরো শতাংশ বাসিন্দা মুসলমান সম্প্রদায়ের। গত বিধানসভা নির্বাচনে এখানে জিতেছিল আম আদমি পার্টি। এমএলএ রাজু বলেছেন, প্রতিদিন গোলমাল থেমে গেলেই বিজেপির লোকেরা গোলমালের কথা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এলাকায় প্রচার করে উসকানি দিয়ে বেড়াচ্ছে।