- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

গুজরাতবাসীদের জরুরি আবেদন : দেশ জুড়ে মিঠি ভিরদি পরমাণু শক্তি প্রকল্পের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন

ভাবনগর জেলা গ্রাম বাঁচাও সমিতি, গুজরাত অণু-উর্জা মুক্তি আন্দোলন ও পর্যাবরণ সুরক্ষা সমিতির চিঠি, ১৪ সেপ্টেম্বর#

মিঠি ভিরদির পরমাণু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মহিলাদের প্রতিবাদ গুজরাটে। ছবিসূত্র আইপিএস।
মিঠি ভিরদির পরমাণু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মহিলাদের প্রতিবাদ গুজরাটে। ছবিসূত্র আইপিএস

গুজরাতের প্রস্তাবিত ৬০০০ মেগাওয়াট মিঠি ভিরদি পরমাণু শক্তি প্রকল্পের দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তারা আপনাদের সাহায্য চাইছে। আপনারা ২৩ সেপ্টেম্বর কিংবা তার আগে আপনাদের শহরে বা নিজেদের গোষ্ঠীর মধ্যে একটা সভার আয়োজন করুন। সেই সভায় এই প্রকল্প বিরোধী আন্দোলনের সপক্ষে একটা প্রস্তাব গ্রহণ করুন। সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন কর্তৃপক্ষের এক বৈঠকে এই প্রকল্প চূড়ান্ত করা হবে। যদি আপনি আমেরিকায় থাকেন, তাহলে নিউ ইয়র্ক শহরে ওই সময়টাতেই একটা প্রতিবাদ সংগঠিত করুন।
গুজরাত সরকারের সঙ্গে নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার এক চুক্তির মাধ্যমে গুজরাতের ভাবনগর জেলার মিঠি ভিরদি গ্রামকে পরমাণু প্রকল্পের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। জাসপারা, মিঠি ভিরদি, মান্ডয়া, খাদারপার ও সোসিয়া — এই পাঁচটি গ্রামের ৭৭৭ হেক্টর উর্বর চাষের জমি এই প্রকল্পের জন্য নষ্ট হয়ে যাবে। জাসপারা, মিঠি ভিরদি ও সোসিয়া উপকূলবর্তী গ্রাম। এই জমিতে বাদাম, গম, বাজরা, তুলো, নারকেল, চিকু এবং দারুণ সুস্বাদু আমের ফলন হয়। এই এলাকায় পেঁয়াজ, বেগুন, টমাটো, লাউয়ের মতো সবজি চাষ হয়। এছাড়া এখানকার মাটিতে কাজু বাদামও হয়। এইসব গ্রামের মানুষ জানত না যে তাদের খেতের ওপর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প হতে চলেছে। পর্যাবরণ সুরক্ষা সমিতির কাছ থেকে সর্বনাশের খবর পেয়ে ২০০৭ সালে এইসব গ্রামের মানুষ ভাবনগর জেলা গ্রাম বাঁচাও সমিতি এবং অণু উর্জা অভ্যাস জুথ, গুজরাত অণু-উর্জা মুক্তি আন্দোলন ও পর্যাবরণ সুরক্ষা সমিতির উদ্যোগে পরমাণু প্রকল্পের বিপদ সম্পর্কে অবহিত হয়। তখন থেকে তারা আওয়াজ তোলে, ‘পরমাণু প্রকল্প মিঠি ভিরদি-তে নয়, পৃথিবীর কোথাও নয়’।
২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমার ভয়াবহ পরমাণু চুল্লির দুর্ঘটনার পরেও ভারত সরকার জিদ ধরে তামিনাড়ুর কুডানকুলাম, মহারাষ্ট্রের জইতাপুর, অন্ধ্রপ্রদেশের কোভাডা, হরিয়ানার গোরখপুর, মধ্যপ্রদেশের চুটকা এবং পশ্চিমবঙ্গের হরিপুরে পরমাণু প্রকল্প তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারাপুর, রাওয়াতভাটা, কলপক্কম, কাইগা, কাকরাপার ও হায়দ্রাবাদে মানুষ তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া ও তার বিষম প্রভাব নিয়ে প্রতিবাদ করেছে। ইউরেনিয়াম মাইনিং নিয়েও ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মেঘালয়ে প্রতিবাদ হয়েছে। সরকার ও পরমাণু কর্তৃপক্ষ কোনো কথায় কান দিচ্ছে না।
২০ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আমেরিকা সফর করবেন। সম্ভবত ওই সময়েই পরমাণু বিদ্যুৎ কোম্পানি ওয়েস্টিংহাউস ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার মধ্যে মিঠি ভিরদি পরমাণু শক্তি প্রকল্পের চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে। এর প্রতিবাদে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ২৩ সেপ্টেম্বর মিঠি ভিরদি থেকে ভাবনগর ৪০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে যাবে। আপনারাও ওইদিন ওদের প্রতিবাদের পাশে দাঁড়ান। আপনার নিজের জায়গায় নিজের মতো করে সংহতি জ্ঞাপন করুন।