- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

গণিতের কর্মশালায় খুশি পড়ুয়ারা

সোমনাথ, কোচবিহার, ১৩ নভেম্বর#

গণিতের কর্মশালায় ছাত্রছাত্রীরা। ছবি প্রতিবেদকের।
গণিতের কর্মশালায় ছাত্রছাত্রীরা। ছবি প্রতিবেদকের।

৬ নভেম্বর ২০১৪ কোচবিহারের বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে হয়ে গেল ৩ ঘন্টার এক অঙ্ক কর্মশালা। কোচবিহার শহরে এই ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল অষ্টম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অঙ্কের ভীতি দূর করার জন্যে তাদের সাথে খোলাখুলি কথাবার্তা বলা, অঙ্ককে জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন ধরনের ‘শর্ট কাট’ পদ্ধতির প্রয়োগ কৌশল, তাছাড়া  পরীক্ষায় নম্বর বাড়ানোর নানা ধরনের ছোটখাটো পরামর্শ।
কোচবিহার শহরে এই ধরনের একটা সাহসী উদ্যোগ নেওয়ার কথা প্রথমে চিন্তাভাবনা করেন শ্রীশ্রী করুণাময়ী হাইস্কুলের গণিত শিক্ষক শ্রী প্রণয় দেবনাথ। সাথে পেয়ে যান অ্যালফাবেট বইয়ের দোকানের কর্ণধার শ্রী কৌশিক ভৌমিককে। এই কর্মশালাকে বাস্তবে রূপদান করতে প্রণয়বাবু পাশে পেয়েছেন ডাঃ বি.সি.রায় মেমোরিয়াল কমিটি ও বিধান শিশু উদ্যানের ‘প্রয়াস’-কে।
কর্মশালা শুরু হয় ঠিক ১১.৩০ মিনিটে। অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেথুন কলেজের অধ্যাপক ডঃ পার্থ কর্মকার। সামান্য কিছু প্রারম্ভিক কথাবার্তার পরই তিনি ছাত্রছাত্রীদের সাথে সরাসরি কথাবার্তায় চলে আসেন। ছাত্রছাত্রীরাও প্রাথমিক আড়ষ্টতা কাটিয়ে অধ্যাপক কর্মকারের সাথে যোগদান করে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বা ইতস্তত ঘোরাঘুরি করা অভিভাবকরাও ভেতরে চলে আসেন। প্রাথমিক পর্বের দুঘন্টা সময় কেটে যায় দেখতে দেখতে। টিফিনের পর মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের জন্যে ছিল বিশেষ পরামর্শ। এই কর্মশালায় যোগ দিয়েছিল ১৩০ জন ছাত্রছাত্রী আর ২৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা।
অধ্যাপক কর্মকার এই কর্মশালা করে খুবই খুশি হন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন ভবিষ্যতে তিনি আরও এই ধরনের গণিত আসরে আসতে চান। প্রয়োজনে ২ বা ৩ দিনের জন্যেও এরকম আয়োজন করা যেতেই পারে। অভিভাবকেরাও  প্রণয়বাবুকে এই ধরনের কর্মশালা আয়োজনের জন্যে বারেবারে অনুরোধ করেন।  অধ্যাপক কর্মকার এই ধরনের কর্মশালা হলেই তিনি আসবেন বলে ছাত্রছাত্রীদের কথা দিয়েছেন। সাথে তাঁর সঙ্গে ভবিষ্যতে যোগাযোগের জন্যে ফোন নম্বরও দিয়ে গিয়েছেন।
শুধু এই কর্মশালাই নয়। প্রণয়বাবুর উদ্যোগে ‘মেধা অন্বেষণ’ ও ‘গণিত মেধা অন্বেষণ’ নামে দুটি পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে যাতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মান যাচাই করতে পারে। প্রণয়বাবুর সাথে কথা বলে জানা গেল যে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির দিক দিয়ে জেঙ্কিন্স স্কুল আর গোপালনগর হাইস্কুলই এগিয়ে। তার কারণ এই ধরনের কর্মশালা প্রথমবার হচ্ছে বলে এখানে ঠিক কী হবে সেটা না জেনে ছাত্ররা আসতে চায়নি বা অভিভাবকরা পাঠাতে চাননি আর প্রান্তিক স্কুলগুলিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কর্মশালায় যোগ দেওয়া গণিত শিক্ষক শ্রী জীবন কুমার সরকার, শ্রী প্রদ্যোৎ দে, শ্রী মনোতোষ ধরের মতো বাকিরাও এই কর্মশালা আবার করার জন্যে আগ্রহী।  তবে একটা সমস্যার কথা উল্লেখও করেন।

এই কর্মশালায় যোগদানের জন্যে নির্ধারিত প্রবেশমূল্য ছিল ৫০টাকা। এই টাকা অনেক ছাত্রছাত্রীদের পক্ষেই দেওয়া সম্ভব, কিন্তু ‘৫০ টাকা নিয়ে একদিনে কী শেখাবে’ এই মনোভাবের কারণে অভিভাবকরাও বিশেষ করে শহরতলী ও গ্রামের দিকে এই ব্যাপারে একেবারেই উৎসাহ দেখাননি। প্রণয়বাবুর আশা পরেরবার আরও অনেক ছাত্রছাত্রী নিয়ে এই কর্মশালা আয়োজন করতে পারবেন।