- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

জাতিদাঙ্গা বিধ্বস্ত আসাম থেকে সরেজমিনে —- ছবি, প্রতিবেদন, অডিও-র সম্ভার

জিতেন নন্দী, রামজীবন ভৌমিক, মুহাম্মদ হেলালউদ্দিন এবং কামরুজ্জামান ৮ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত আসামের জাতিদাঙ্গা বিধ্বস্ত বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন, ছবি তোলেন, সাক্ষাৎকার নেন। তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন, ছবি এবং অডিও প্রকাশিত হচ্ছে এখানে। এই তথ্যানুসন্ধানে সহায়তা করেছেন সংবাদমন্থন এবং মন্থন সাময়িকী পত্রিকার দীর্ঘদিনের পাঠক নারায়ণ নন্দী এবং আসামের দীর্ঘদিনের বামপন্থী কর্মী তাপস দাস। এখানে প্রকাশিত তথ্যাদির সম্পূর্ণ দায় জিতেন নন্দী, সম্পাদক, সংবাদমন্থন এবং মন্থন সাময়িকী পত্রিকা। প্রকাশিত তথ্য, অডিও বা ছবি যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন, কেবল সূত্র হিসেবে ‘সংবাদমন্থন’ ওয়েবসাইট উল্লেখ করলেই হবে, এবং ই-মেল মারফত তা আমাদের জানালে আরো ভালো হয়। আমাদের ইমেল : manthansamayiki@gmail.com

মন্থন সাময়িকীর জুলাই আগস্ট সংখ্যায় প্রকাশিত লেখাগুলি

সম্পাদকীয়  (বড়ো জাতির নিজ ভূমে পরবাসী হওয়ার ইতিহাস অনেক পুরোনো। ব্রহ্মপুত্র নদী তীরবর্তী আদিম অধিবাসী বড়োরা ভারতবর্ষের চাষিসমাজ গড়ে ওঠার আগেই সেখানে বসবাস করত। বর্ণ বা জাত ব্যবস্থা ভিত্তিক গ্রামসমাজে হাল-লাঙল দিয়ে চাষ এল ব্রহ্মপুত্রের উর্বর নদী উপত্যকায়। ক্রমশ বড়োরা গভীর অরণ্যে সরে যেতে থাকে। চাষের কাজে তারা সেচ ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। চালিয়ে যেতে থাকে ঝুম চাষ আর শিকার। ……)

দাঙ্গা-বিধ্বস্ত বড়োভূমি থেকে ফিরে (গুয়াহাটি থেকে আমাদের সফর শুরু হয়েছিল ৮ আগস্ট। কলকাতা থেকে গিয়েছিলাম আমি, মুহাম্মাদ হেলালউদ্দিন, আর কামরুজ্জামান খান। নারায়ণ নন্দী চলে এলেন ডিমাপুর থেকে। কোচবিহার থেকে পরদিন সকালে এলেন রামজীবন ভৌমিক। এই নিয়ে তৈরি হল আসামের হালফিল জাতিদাঙ্গার স্বরূপ অনুসন্ধানকারী আমাদের দল। সরাসরি দাঙ্গা বা সংঘর্ষ অনেকটা প্রশমিত হলেও তার জের ভালোমাত্রায় রয়ে গেছে আসাম জুড়ে। আমরা তা টের পেলাম সরাইঘাট এক্সপ্রেসে হাওড়া থেকে যাওয়ার পথেই।…)

উনিশ বছর শরণার্থী শিবিরে(আমরা ১৯৯৩ সালের ৭ অক্টোবর উত্তরাঞ্চলের আমডাঙা, মিলনবাজার, আনন্দবাজার, ভওরাগুড়ি, পাটাবাড়ি, মালিভিটা ইত্যাদি গ্রাম থেকে উৎখাত হয়ে এসেছি। সেদিন ভোররাতে চারটার সময় বড়ো উগ্রপন্থীরা আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। তখন ওই অঞ্চলটা ছিল পুরোনো কোকরাঝাড় জেলায়, এখন বিটিএডি এলাকার মধ্যে চিরাং জেলায়। ওখানে ৫৪টা গ্রামে মুসলমান জনসংখ্যা বেশি ছিল।…)

বড়োভূমিতে দাঙ্গার দিনলিপিগুয়াহাটি, শিলচর ও ডিব্রুগড় থেকে বাংলায় প্রকাশিত দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকা থেকে নেওয়া সংবাদের ভিত্তিতে এই দিনলিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। সাধারণত যে কোনো দাঙ্গার মোটাদাগের খবর থেকে নানারকম ভুল ও একপেশে ধারণার সৃষ্টি হয়। সেই ধারণাগুলিকে অনেকসময় রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারও করা হয়। যেহেতু আমাদের দেশের রাজনীতির জাতীয়, আঞ্চলিক, ভাষা ও কৌমগত ভিন্ন ভিন্ন তল রয়েছে, ভ্রান্তি থেকে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা থেকেই যায়।

বড়োভূমি এবং বড়ো জনজাতির ইতিহাস১৮২৬ সালে প্রথম বার্মিজ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে আসাম প্রথম ব্রিটিশ আশ্রিত রাজ্যে পরিণত হয়। ১৮৩২ সালে কাছাড়কে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৮৩৫ সালে জয়ন্তিয়া পাহাড় অঞ্চলকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এলাকার মধ্যে ঢোকানো হয় এবং ১৮৩৯ সালে আসামকে বাংলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

বড়ো মুসলমান সংঘর্ষের প্রেক্ষিতমুসলমান ও বড়োরা অনেক অনেক বছর ধরে এখানে আছে। আসামে স্বাধীনতার পর খিলঞ্জিয়া (আদি বাসিন্দা) মুসলিমরা এখানে আসে। আমার বাড়ি চিরাংয়ে, অবিভক্ত কোকরাঝাড় জেলায়। আগে ছিল অবিভক্ত গোয়ালপাড়া জেলা, তারপর হল অবিভক্ত কোকরাঝাড় জেলা, এখন চিরাং। বিটিসি (বড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল) চুক্তি হল ২০০৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি।

১৯৯৬ সালের বড়ো আদিবাসী সংঘর্ষের বৃত্তান্তমি ‘আদিবাসী কোবরা মিলিটারি অফ আসাম’-এর চেয়ারম্যান। বর্তমানে আমরা আসাম সরকারের সঙ্গে অস্ত্র-বিরতিতে আছি। ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই আমাদের এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ মে থেকে নামনি আসামে, বিশেষ করে কোকরাঝাড়, ধুবড়ি ও বঙ্গাইগাঁও জেলায় সমস্ত আদিবাসীদের বড়ো উগ্রপন্থীরা নৃশংসভাবে মারতে শুরু করে।

বড়ো মুসলমান সংঘর্ষের অবসান কোন পথেগুয়াহাটি বশিষ্ঠতে শান্তি সাধনা আশ্রমে ১১ সেপ্টেম্বর ২০১২ গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিস্টিক্সের অধ্যাপক আবদুল মান্নান-এর বক্তৃতার অনুলিখন। অনুলিখন জিতেন নন্দী।

কোকরাঝাড়ের ডায়েরি২ আগস্ট আমরা তিনজন — আমি, সুস্মিতা আর শুভ পৌঁছলাম অশান্ত কোকরাঝাড়। পরদিন থেকে আমরা বেরোলাম তদন্তের কাজে। প্রথমে গেলাম ডেপুটি কমিশনার শ্রী জয়ন্ত নারলিকরের অফিসে। তিনি একই সাথে জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের দায়িত্বে — কোকরাঝাড়ে এভাবেই চলে। আমাদের সঙ্গে তিনি খুব ভালো ব্যবহার করলেন, পরিস্থিতি বোঝালেন।



১৪ সেপ্টেম্বরের নোট

গতকাল ১৩ সেপ্টেম্বর, আমি, রামজীবন, হেলালউদ্দিন ও কামরুজ্জামান গোসাইগাঁও ও ধুবড়িতে কতকগুলো শিবির ঘুরে দেখেছি। তার আগেরদিন যখন আমরা কোকরাঝোড় পৌঁছালাম, তখন দেখলাম, স্টেশনে এবং শহরের সব জায়গায় পোস্টার সাঁটা আছে। পোস্টারে লেখা ছিল, ণ্ণবাংলাদেশীদের বয়কট করো, নাহলে শাস্তি দেওয়া হবে’। অর্থাৎ অ-বোরোদের পক্ষে পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক এবং উদ্বেগজনক।

কোকরাঝাড়ের একটি ত্রাণশিবির, ছবি জিতেন নন্দী, ১৪ সেপ্টেম্বর
দেওয়াল লিখন, কোকরাঝাড়ে, ছবি জিতেন নন্দী, ১৪ সেপ্টেম্বর

গতকাল সকালে আমরা শ্রীরামপুর স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে আক্রান্তদের ত্রাণশিবিরগুলো দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম, সরকারী উদ্যোগে, যাদের জমির পাট্টা আছে, তাদের ফোটো তোলা হচ্ছে। এর ফলে ত্রাণশিবিরে একটা আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। কারণ গ্রামগুলোতে অনেক অধিবাসী আছে, যারা কয়েকপুরুষের বাসিন্দা, কিন্তু তাদের কোনও জমির পাট্টা নেই। আসলে আসাম সরকার ১৯৮৬ সাল থেকেই জমির পাট্টা নথিভুক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে অনেকেই আছে, যারা জমি কিনেছে, কিন্তু কেনা জমির কোনও সরকারি রেকর্ড নেই। সরকার বলছে, তিন কিস্তিতে ত্রাণশিবিরের লোকেদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে। প্রথম কিস্তিতে যাদের জমির পাট্টা আছে তাদেরকে গ্রামে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা, যারা ত্রাণশিবিরে আছে, তারা বলছে যে তারা একসঙ্গেই গ্রামে ফিরবে।
আজকে ণ্ণঅল বোরো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’-এর পক্ষ থেকে কোকরাঝোড়ে একটা সভা ডাকা হয়েছে। যদিও বৃষ্টি হচ্ছে, তবুও স্কুল-কলেজের ছাত্ররা এবং অঞ্চলের মানুষরা অনেকেই খালি পায়ে হেঁটে, দলে দলে সভায় এসে যোগ দিচ্ছে।

অডিও ফাইল (সাক্ষাৎকার বা আলোচনা) :

বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলনের কর্মী তাপস দাসের সঙ্গে কথা, গুয়াহাটি।


সংবাদলহরী পত্রিকার অসীম মিত্রের সাথে কথা, গুয়াহাটি।

সকালবেলা পত্রিকার অমল গুপ্তর সঙ্গে কথা, গুয়াহাটি।

গুয়াহাটি বশিষ্ট-র শান্তি সাধনা আশ্রমে সর্ব সেবা সংঘর প্রেসিডেন্ট রাধা ভাটের সঙ্গে কথা।

তারেন বড়ো-র সঙ্গে কথা, গুয়াহাটি।


গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল মান্নানের বক্তব্য

বড়োসা-র সম্পাদক চিনু বসুমাতারির সঙ্গে কথা, কোকরাঝাড়

টিটাগুড়ির বিজয় কুমার ব্রহ্ম-র সঙ্গে কথা, কোকরাঝাড়

গ্রাহামপুর এইচ এস স্কুলের ক্যাম্পে রেজিয়া বেওয়া-র সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

ধুতুরামারি এমই মাদ্রাসার ক্যাম্পে সোরাব আলি-র সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

হাতিডুবা কলেজের ক্যাম্পে আনথাইবাড়ি গ্রামের গাঁওবুড়া জয়নাল আবেদিন শেখ-এর সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

হাতিডুবা কলেজের ক্যাম্পে বাবুবিল গ্রামের গাঁওবুড়া আনোয়ার আলি-র সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

সোনাহাটি সিনিয়র মাদ্রাসার ক্যাম্পে মুহাম্মদ আবারুদ্দিন শেখ-এর সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

সোনাহাটি সিনিয়র মাদ্রাসার ক্যাম্পে মুহাম্মদ আবদুল করিম-এর সঙ্গে কথা, গোসাইগাঁও

যুগশঙ্খ পত্রিকার স্বপন আইচের সঙ্গে কথা

আদিবাসী কোবরা মিলিটারির চেয়ারম্যান জাব্রিয়াস খাখা-র সঙ্গে কথা, শ্রীরামপুর, গোসাইগাঁও

কোকরাঝাড়ের এমএলএ প্রমীলা রাণী ব্রহ্ম-র সঙ্গে কথা

নাচানগুড়ির ৩ নং পঞ্চায়েতের সদস্য নূর মুহাম্মদ আলি-র সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

ডোনকিনামারি ক্যাম্পের আসিজুল খাতুন-এর সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

ডোনকিনামারি ক্যাম্পের হাওয়া বানু-র সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

ডোনকিনামারি ক্যাম্পের আবুল কাসেম-এর সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

ডোনকিনামারি ক্যাম্পের মনোয়ারা বিবি-র সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

ডোনকিনামারি ক্যাম্পের মুহাম্মদ আফজালুর রহমান-এর সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

লক্ষ্মীপুর প্রাইমারি স্কুলের ক্যাম্পের মুহাম্মদ নাজমুল হক-এর সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও

হাপাসোরা ক্যাম্পের (১৯ বছর ধরে থাকা অস্থায়ী ক্যাম্প) হাবিলউদ্দিন আহমেদ-এর সঙ্গে কথা, বঙ্গাইগাঁও