- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

কুডানকুলাম পরমাণু প্রকল্প বাতিলের দাবিতে মৎস্যজীবীদের তুতিকোরিন বন্দর দখল

ছবি ও তথ্যসূত্র প্রবাকর কাপ্পিকুলম-এর ফেসবুক পেজ, ২২ সেপ্টেম্বর#

প্রকল্পের বিকিরণের প্রভাবে থাকা মাছ আমদানি বন্ধ করে দেবে ইউরোপীয় বাজার

প্রায় হাজার খানেক মৎস্যজীবী নৌকাতে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী বিভিন্ন দিক থেকে এসে তুতিকোরিনের চিদাম্বরম বন্দরের প্রবেশপথ কিছুক্ষণের জন্য দখল নিয়ে নেয় শনিবার ২২ সেপ্টেম্বর। এই প্রতীকী প্রতিবাদে সামিল হয়েছিল তিরুনেলভেলি, তুতিকোরিন এবং কন্যাকুমারি জেলাগুলির মৎস্যজীবীরা। উল্লেখ্য, কুদানকুলাম তিরুনেলভেলি জেলারই অংশ, তুতিকোরিন বন্দর কুদানকুলাম থেকে ৬০ মাইল দূরে। মৎস্যজীবীদের এই প্রতিবাদে সময়ই ব্যাপক নৌবাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ জায়গাটি ঘিরে ছিল, আকাশপথে চক্কর দিচ্ছিল নৌবাহিনীর বিমান। এই প্রতিবাদ কর্মসূচী দেখিয়ে দেয়, কুদানকুলামের একটি চুল্লিতে জ্বালানি সংযোগ করা হলেও তাতে মৎস্যজীবীদের প্রতিবাদ বিন্দুমাত্র দমেনি।


তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের প্রতিবাদে যৌক্তিকতা আছে। কারণ, কুদানকুলাম পরমাণু প্রকল্পে কোনও দুর্ঘটনা হলে তার ফলে শহরনিবাসী মন্ত্রী, পরমাণু কর্তা বা আমলাদের বাস্তবত কিছু হবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে লক্ষ লক্ষ মৎসস্যজীবী। আর যদি কোনও দুর্ঘটনা নাও ঘটে তবুও পরমাণু চুল্লিটির থেকে সমুদ্রের জলে মেশা দূষিত জলের প্রভাবে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। মাছ পালিয়ে যাবে গভীর সমুদ্রে। মাছ ধরে যারা দিন গুজরান করে তাদের জীবিকা থাকবে না। কাজ হারিয়ে অচিরেই উজার হয়ে যাবে শত শত বছর ধরে সমুদ্রতীরে থাকা হাজার হাজার জেলেপাড়া গুলি।

এই আন্দোলনের সংগঠক ‘বিক্ষোভ কমিটি’-র মুখপাত্র সুভাষ ফার্নান্ডো বলেছেন, ‘একবার প্রকল্প চালু হলে, এর বিকিরণের প্রভাবে থাকা মাছ আমদানি করা  করে দেবে ইউরোপীয় বাজার। যদিও জ্বালানি সংযোগ হয়েছে, তবুও এটাকে বন্ধ করার সময় পেরিয়ে যায়নি।’
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল কুদানকুলামের ইদিনথাকারাই গ্রাম থেকে জানানো হয়েছিল, এবার ব্যাপক প্রতিবাদ সংগঠিত হবে তামিলনাড়ুর বিস্তীর্ণ উপকূল এলাকার মৎস্যজীবীদের নিয়ে। এদিনের আন্দোলনকারীরা ইদিন্থাকারাই গ্রাম থেকে পুলিশ সরিয়ে আনা, আন্দোলনকারীদের ওপর থেকে মামলা তুলে নেওয়া এবং বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা বাতিলের দাবি তোলে।

গত কয়েকমাস জুড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভারত, চীন, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশ থেকে মাছ আমদানির ওপর নজরদারী কড়া করেছে। বিভিন্ন ওষুধ দেওয়ার কারণে নিষিদ্ধ হয়েছে এসব দেশ থেকে চিংড়ি আমদানি। এছাড়া বহু দেশ ফুকুশিমা পরমাণু বিপর্যয়ের পর জাপান থেকে ‘সামুদ্রিক খাবার’ আমদানি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।