- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

কুডানকুলামের দূরবর্তী গ্রামে ‘আপৎকালীন পরমাণু মহড়া’ একটি ভাঁওতা, জানাল তথ্যানুসন্ধানী দল

শমীক সরকার, কলকাতা, ১৫ জুলাই। পুরো রিপোর্টটি পাওয়া যাবে\EN{10}http://khobordar.com/wp-content/uploads/2012/07/Nakkaneri-Nuclear-Fact-Finding-Report-Final.pdf ছবিটি গ্রামবাসী এক বৃদ্ধের, রিপোর্ট থেকে নেওয়া#

পরমাণু চুল্লি চালু করার আগে আশেপাশের এলাকায় একটি ‘আপৎকালীন পরমাণু মহড়া’ করতে হয়। তা নাহলে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি এজেন্সির নিয়মে পরমাণু চুল্লি চালু করা যাবে না। চুল্লিতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে যেন আশেপাশের লোকজন পালিয়ে যেতে পারে খুব দ্রুত, তার প্রস্তুতি হল এই মহড়া। এই মহড়া দেওয়াতে গিয়েই কুডানকুলামে সাম্প্রতিক পরমাণু বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছিল একবছর আগে। সেই আন্দোলনকে আপাতত প্রায় এক লক্ষ মামলা দিয়ে অগ্রাহ্য করা গেলেও, মহড়াটি তো করতেই হত। সেই মহড়ারই আয়োজন হয়েছিল গোপনে, কুডানকুলামের পরমাণু চুল্লির ৭ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট গ্রাম নাক্কানেরিতে, ৯ জুন ২০১২ সকালে।
মহড়া কেমন হয়েছে, তা সরেজমিনে জানার জন্য সেই গ্রামে ‘পিপলস ইউনিয়ন অব সিভিল লিবার্টিস’-এর একটি প্রতিনিধিদল যায় ১৩ এবং ২০ জুন। তারা সেখানে গিয়ে গ্রামবাসীদের সাক্ষাৎকার নেয়, তাদের স্বাক্ষরিত বয়ান নেয় এবং ভিডিওগ্রাফি করে। সেই বয়ানে জানা যাচ্ছে, গ্রামবাসী বা তাদের প্রতিনিধি, কাউকেই বলা হয়নি যে এটি দূরবর্তী কোনো জায়গায় পরমাণু দুর্ঘটনা হলে কী করতে হবে, তার মহড়া। পরমাণু কর্তারা এসে গ্রামে কয়েক ঘন্টা ছিল।  তারপর তারা ফিরে গিয়ে প্রেস বিবৃতি দেয় — আপৎকালীন পরমাণু মহড়া হয়ে গিয়েছে।
গ্রামবাসীরা জানায়, এই গ্রামে ১৫০টি ঘর, ৫০০ জন মানুষের বাস, বেশিরভাগই দলিত পারাইয়ার জাতের। তাদের বেশিরভাগই পাশের বায়ুকল, ফার্ম, মৎস্যচাষ প্রভৃতি কাজে বেরিয়ে যায় সকালে, ফেরে সন্ধ্যেবেলা। আগে থেকে না জানলে গ্রামে এসে কেবল বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের পাওয়া যায়। ৯ জুন এক বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে কিছু লোক এসেছিল গ্রামে। তারা চায়ের দোকানে বসে চা খেয়েছে, আর ফাঁকা রাস্তার ছবি তুলেছে। লোকে ভেবেছে, রাস্তাটা চওড়া হবে, তাই ছবি তুলছে। গ্রামের একজন বুড়ো লোক আরুমুগাম, জিজ্ঞেস করে, রাস্তা তো করবে পঞ্চায়েত, পুলিশ তো করবে না! তখন তাকে ভাগিয়ে দেয় পুলিশ। কাউকে কাউকে পুলিশ বলে, আমরা তোমাদের নিরাপত্তা দিতে এসেছি। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যরা কানাঘুসো শুনেছিল, পরমাণু কর্তারা আসছে, কিন্তু কেন আসছে তারা শোনেনি। তাদের সঙ্গেও নেয়নি পরমাণু কর্তারা।
তথ্যানুসন্ধানী দলটি দাবি জানিয়েছে, ওই মহড়া আইন মেনে হয়নি, তাই তা বাতিল করা হোক।