- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

কলকাতার বড়ো মিডিয়া কি পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় দাঙ্গায় উসকানি দিচ্ছে?

শমীক সরকার, কলকাতা, ২০ অক্টোবর#

১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করে ঠিক করেছে, আসন্ন উৎসবের মরশুমে সাম্প্রদায়িকতায় উসকানি দিতে পারে এমন এসএমএস চালাচালির ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যাপারে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, কিছুদিন আগে অসম দাঙ্গার ঘটনা এবং মুসলিম বিরোধী এক চলচ্চিত্র নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের এসএমএস-এর বহর মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছিল। স্বরাষ্ট্র সচিব মোবাইল সংস্থার কর্তাদের নির্দেশও নাকি দিয়েছেন, জনমানসে হিংসার বাতাবরণ তৈরি করে, এই ধরনের এসএমএস চালাচালির ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালাতে।

কিছুদিন আগেই মায়ানমার এবং আসামে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ওপর হিংসাত্মক ঘটনার কিছু খবর এবং ছবি (যার কিছু কিছু নকল ছবি) ইন্টারনেটে প্রকাশ করার দায়ে বেশ কিছু ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারি স্বরাষ্ট্র দফতর। বলা হয়েছিল, সেইসব ছবি উত্তর পূর্ব ভারতের অধিবাসীরা, যারা মূলত দক্ষিণ ভারতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তাদের মধ্যে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করছে। প্রচারের দৌলতে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন শহর ত্যাগ করেছিল বেশ কয়েক হাজার উত্তর- পূর্ব ভারতীয়। তাদের জন্য আয়োজন করা স্পেশ্যাল ট্রেনে সওয়ারি হয়ে যাত্রাপথে ভয়াবহ হিংসার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছিল উত্তর- পূর্ব ভারতের অন্তত সাতজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী। পুনে, বাঙ্গালোর ইত্যাদি কয়েকটি শহরে বসবাসকারী উত্তর- পূর্ব ভারতের অধিবাসীদের ওপর স্থানীয় মুসলিমরা হামলা চালিয়েছে বলেও কিছু অভিযোগ উঠেছিল।

আসামের দাঙ্গা, যা কয়েক লক্ষ বাঙালি মুসলমান এবং বেশ কয়েক হাজার বড়ো জাতির মানুষকে ঘরছাড়া করেছে, তা ঠেকাতে ব্যর্থ হলেও সারা ভারত জুড়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ, যা অনেকসময়ই হিংসাত্মক হয়ে দাঁড়াচ্ছিল, তা ঠেকাতে যথেষ্ট তৎপর ছিল বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন শহরে এবং মুম্বইয়ে বেশ হিংসাত্মকভাবেই দমন করা হয়েছিল এই প্রতিবাদ। একাধিক মুসলিম যুবক আহত এবং নিহত হয় পুলিশি তৎপরতায়।

অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে আমাদের দেশে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তরফে কোনো সাম্প্রদায়িক বিক্ষোভ ও প্রচার কর্মসূচি আটকাতে দেশের পুলিশ এবং প্রশাসন যথেষ্ট তৎপর। যার প্রমাণ গতকাল রাজ্যে স্বরাষ্ট্র দফতরের বৈঠক।

কিন্তু একইভাবে দেশে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের উসকানি দিয়ে, তাদের কোণঠাসা করার মতলবে যে প্রচার কর্মসূচি জারি হয়েছে তাবড় মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের দৌলতে, সে সম্পর্কে পুলিশ প্রশাসনের সেই তৎপরতা আছে কি?

১৬ অক্টোবর কলকাতার বড়ো মিডিয়া আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রচারপত্রের বিজ্ঞাপন

গত ১৬ অক্টোবর বাংলার সবচেয়ে বড়ো মিডিয়া আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি প্রচারমূলক বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়, এবং তা কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন নয়, একটি সংগঠনের প্রচারপত্র। সংগঠনের নাম খুব ছোটো করে দেওয়া ছিল, রাষ্ট্রীয় গোরক্ষা সেনা, এবং গোরক্ষা সেবা সংঘ। বলাই বাহুল্য এই সংগঠন কোনো লোকপ্রিয় সংগঠন নয়। এবং সম্ভবত তা স্বাধীন কোনো সংগঠনও নয়, ভারতের হিন্দু মৌলবাদী শক্তি ণ্ণরাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ’-এর ঘনিষ্ঠ কোনো শক্তি। বিজ্ঞাপনের বিষয় ছিল, বকরি ঈদে গরু কুরবানি বন্ধ রাখার আহ্বান। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞাপনে সুচতুরভাবে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন পদবির কিছু লোকের নামোল্লেখ করে, তাদের বয়ানে গো-হত্যার বিরোধিতা উত্থাপন করা হয়েছে। সরাসরি বলা না হলেও, বিজ্ঞাপনে নরমে গরমে ণ্ণভারতবাসী’ মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ণ্ণঅনুরোধ’ করা হয়েছে, ণ্ণআগামী বকরী-ঈদে গরু হত্যা করবেন না।’

বিজ্ঞাপনে বেশ কিছু কাল্পনিক তথ্যের অবতারণা করা হয়েছে, এবং কিছু অবৈজ্ঞানিক কথাও বলা আছে, যা নিঃসন্দেহে কুসংস্কারের সমতুল্য। যেমন, একটি ণ্ণরিসার্চ বই’ এর উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ণ্ণপশুদের সাময়িক (!) হত্যার থেকে উৎপন্ন ব্যথার তরঙ্গ এত শক্তিশালী হয় যে, সুনামি, ভূমিকম্প ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদ ডেকে আনে।’ গরুর সংখ্যা কমা, গরুর দুধের ঘাটতি এবং শিশুমৃত্যুকে এমনভাবে গাঁথা হয়েছে বিজ্ঞাপনে, তাতে দাঁড়িয়ে যায়, ঈদে গরু কুরবানির কারণে ভারতে শিশুমৃত্যু ঘটছে।

প্রসঙ্গত, ভারতবর্ষ সহ বহু দেশে মুসলিম সহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের পশুর মাংস খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। অমুসলিমদের বিভিন্ন উৎসবে পশুবলি পর্যন্ত দেওয়া হয়। এমনকী ভারতবর্ষেও গো-মাংস খাওয়ার রেওয়াজ কেবল মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের নয়। উত্তর পূর্ব ভারতের বাসিন্দাদের মধ্যে ধর্ম নির্বিশেষে গরুর মাংস খাওয়ার চল আছে। অন্যদিকে কাশ্মীরি মুসলিমদের মধ্যে গরুর মাংস খাওয়ার চল অনেক কম। আবার বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে পশু এবং পাখি বলি দেওয়ার চলও রয়েছে আদিবাসী সমাজে, মুসলিম সমাজে, নিম্নবর্গের হিন্দু সমাজে এবং উচ্চবর্গের হিন্দু সমাজে। খোদ বকরী-ঈদেও কেবল গরু কুরবানি করা হয় না, মুরগি, ছাগল থেকে উট — নানা পশু পাখির কুরবানি হয়। আবার ভারতবর্ষেও গরুকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করার চলও রয়েছে। এই বৈচিত্র্য নিয়েই আমাদের দেশ।

বিজ্ঞাপনে ২০১১ সালের ২ নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের একটি আদেশনামার কথা বলা হয়েছে, যাতে নাকি ১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি অর্ডারে গরু কুরবানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তা কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত, ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতা হাইকোর্টের ওই নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, বকরী ঈদে গরু বেচাকেনা ও কুরবানির জন্য কোনো সরকারি বা প্রশাসনিক কর্মচারী কোনো বন্দোবস্ত করতে পারবে না। এটুকুই। দ্বিতীয়ত, সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯৪ সালের যে রায়ের কথা বলা হয়েছে, তার ভিত্তিতে তদানীন্তন পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘সানডে স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় ৩০ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে একটি আবেদন রাখে, তাতে বলা হয়েছিল, ণ্ণসুপ্রিম কোর্টের একটি সাম্প্রতিক রায়ের কারণে আইনগতভাবে রাজ্য সরকার ১৯৫০ সালের পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী হত্যা নিয়ন্ত্রণ আইন-এর কোনো ছাড় দিতে  পারে না কোনো ণ্ণস্বাস্থ্যবতী গাভী’ বা ‘গাভী’ বা অন্য কোনো প্রাণী উৎসর্গে। এই পরিস্থিতিতে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সবচেয়ে বড়ো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল থেকে সরকার আন্তরিকভাবে আবেদন করছে শান্তি বিঘ্নিত না করার জন্য এবং আইন মেনে চলার জন্য।’

আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থায় বিচারব্যবস্থা যেমন একটি স্তম্ভ, তেমনি নির্বাচিত সরকারও একটি স্তম্ভ। তবে এসবের থেকেও অনেক পুরোনো এবং চিরাচরিত আমাদের দেশের মানব সমাজ। সেই সমাজের ঐতিহ্যই হল বিভিন্ন, বিচিত্র এবং কখনো কখনো পরস্পরবিরোধী প্রথার সহাবস্থান। সেসব প্রথার সংস্কার হয়, কখনো তা পাল্টাতেও পারে, কিন্তু তা একান্তই সমাজের ভেতর থেকেই পাল্টায়, সরকারি নিদান বা বিচারব্যবস্থার রায় চাপিয়ে কখনোই তা সম্ভব হয় না। বাইরে থেকে প্রচারপত্র বিলি করে উপদেশ দিয়েও না। তাই ভারতে ইসলামিক চিন্তার একটি ধারা দারুল উলুম দেওবন্দের কোনও ব্যক্তির বক্তব্য, ণ্ণবকরী ঈদে গরু কুরবানি এড়িয়ে চলুন’ এবং সেই বক্তব্যকে ণ্ণগো-মাতাকি জয়’ স্লোগান দেওয়া ‘গোরক্ষা সেনা’র প্রচারপত্রে হাজির করা ভিন্ন মাত্রাবাহী। দ্বিতীয় কাজটি নিঃসন্দেহে সাম্প্রদায়িক উসকানি এবং ভাগাভাগির উদ্দেশ্যে ঘটানো, আমাদের দেশে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার দীর্ঘ ইতিহাসে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির প্রচারের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটু চর্চা করলেই তা পরিষ্কার হয়। আশা করা যায়, প্রায় শতাব্দী প্রাচীন পত্রিকা আনন্দবাজার-এর তা অজানা নয়।

একই সাথে আরও একটি কথা বলার। যে কোনো প্রাণীহত্যাই ভালো কাজ নয়, কেবল গরু হত্যা নয়। বিয়ে, পার্টি, উৎসব উপলক্ষে আমাদের নাগরিক সমাজে যে লক্ষ লক্ষ ছাগল, মুরগি হত্যা করা হয়, তাও ভালো নয় কোনোমতেই। কিন্তু প্রাণীহত্যা বেশিরভাগ মানব সমাজেরই একটি চালু প্রথা, আমরাও হয়তো ব্যক্তিগত জীবনে তা করে থাকি, এবং সেগুলি মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। এরই সাথে আরও একটি কথা বলার, প্রাণী হত্যার দুই ধরণ আছে, একটি ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য। আরেকটি ভোগ বিলাস ও আমোদ প্রমোদের জন্য। নাগরিক সমাজের প্রাণী হত্যার মধ্যে এই দ্বিতীয় ধরণের প্রাবল্য। তা আরও বেশি নিন্দনীয়।

নদীয়া জেলার মদনপুর রেলস্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে বিভিন্ন বিজ্ঞানের পাশাপাশি আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত গোরক্ষা সেনার বিজ্ঞাপনটিও সাঁটা হয়েছে দেখা গেল। ওপরে আনন্দবাজার পত্রিকার নেমপ্লেটটি ব্যবহার করে, নিচে ওই পত্রিকার ছাপানো বিজ্ঞাপনটি রেখে একটি কোলাজ ফোটোকপি করে নিয়ে আঠা দিয়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গ্রাম অধ্যুষিত মদনপুরে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকে, হিন্দুদের অনেকেই পূর্ববঙ্গীয়। সাম্প্রদায়িক গণ্ডগোলের কোনও নজির নেই এখানে। আরও উল্লেখ্য, এই বিজ্ঞাপনের অদূরেই চোখে পড়ল, ভারতীয় জনতা পার্টির একটি পতাকা, যা মদনপুর স্টেশন চত্বরে খুব একটা দেখা যায়, তা নয়। ছবি তুলেছেন সম্রাট সরকার, ২৬ অক্টোবর।

কিন্তু ঈদের কয়েকদিন আগে, বড়ো মিডিয়ায় কেবল গরু কুরবানি বিষয়ক প্রচারপত্র একটি মারাত্মক ইঙ্গিতবাহী। তা যে এমনকী শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে, তার ইঙ্গিত পাওয়া যায় ১৯৯৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জারি করা ‘আবেদন’-এ, যার কথা একটু আগে বলা হয়েছে। আসাম দাঙ্গা, মুসলিম ধর্মবিরোধী ব্যঙ্গচিত্র প্রভৃতির পটভূমিতে এ বছর বাংলার সবচেয়ে বড়ো মিডিয়া আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রায় হাফ পেজ বিজ্ঞাপনে এই প্রচারপত্র কি একভাবে সাম্প্রদায়িক হিংসার উসকানি নয়? হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের প্রচারপত্র বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশ করে পত্রিকাটি কি ওই সংগঠনের চেয়েও বেশি মাত্রায় এই উসকানির দায়িত্ব নিয়ে নিচ্ছে না? তাহলে কি টাকা দিলে সবই ছাপা যায়? অচিরাচরিত মিডিয়া, যথা ইন্টারনেট ও মোবাইল এসএমএস সাম্প্রদায়িকতার প্রচার বিষয়ে প্রশাসনের কড়া মনোভাবের পরিচয় তো পাওয়া গেছে, বড়ো প্রিন্ট মিডিয়া কি এর আওতার বাইরে? এখনও পর্যন্ত তো এই বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের কোনো কথা শুনতে পাইনি। আরও গভীর উদ্‌বেগের বিষয়, মুসলিম সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে প্রশাসন বেশ তৎপর, কিন্তু সংখ্যাগুরুর ধর্মীয় মনোভাবের প্রতিনিধিত্ব দাবি করা সংগঠনের মুসলিম বিরোধী সাম্প্রদায়িকতার উসকানি নিয়ে প্রশাসনের সেই তৎপরতা কোথায়? এই উসকানি এড়িয়ে গেলে, তা কিন্তু ভবিষ্যতে আরও বড়ো হিংসার জন্ম দিতে পারে। সেই ইঙ্গিত গতবছর ২০১১ সালে বকরি ঈদের প্রাক্কালে গোরক্ষা সেনার নেতাদের কার্যকলাপে স্পষ্ট। এই কার্যকলাপের বিবরণ পাওয়া যায় সাম্প্রদায়িক, মুসলিমবিরোধী, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির মুখপত্র এবং ওয়েবসাইটে। সেখান থেকেই নিচে তা তুলে দেওয়া হল :

ণ্ণকলকাতা হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় গোরক্ষা সেনার প্রধান শ্রী আশু মোঙ্গিয়া, আর্য বীর দলের পণ্ডিত যোগেশ শাস্ত্রী এবং আরও কিছু গো-ভক্ত কলকাতার দমদম এলাকার কিছু জায়গায় ২-৩ নভেম্বর রাতে হানা দেন কলকাতায় বেআইনি গরু পরিবহণ ধরার জন্য। তারা কিছু গরু এবং বাছুর আটক করলেও পুলিশ তা কসাইদের এবং পরিবহণকারীদের নিয়ে যেতে দেয়। …

এই সময় আশু মোঙ্গিয়া এবং অন্যান্য গোরক্ষাকারীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় এবং তাদের ওপর মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে মুসলিম গুণ্ডারা। পুলিশ তাদের উদ্ধার করলেও, কর্তব্যরত পুলিশরা মুসলিম পরিবহণকারীদের গরুগুলিকে কলকাতার বেআইনি বাজারগুলিতে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। ……’

আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে স্পষ্টতই এই ইস্যুটিকে নিয়ে দাঙ্গা বাধাতে তৎপর হয়েছে ওই মৌলবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। এবছরও যদি একই কাণ্ড ঘটায় তারা, তাহলে তাদের প্রচারপত্র বিজ্ঞাপন হিসেবে ছেপে তাদের দাঙ্গা বাধাতে মদত দেওয়ার দায় বড়ো মিডিয়া আনন্দবাজার পত্রিকা অস্বীকার করতে পারে কি?