- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

‘এদেশে চাষের সর্বনাশ হয়েছে স্বামীনাথনের মতো লোকেদের মদতে’

আমরা বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী, আবাসিক এবং শান্তিনিকেতনের শুভ কামনাকারী সমস্ত বন্ধুরা এম এস স্বামীনাথনকে এবছর বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম প্রদান করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছি। আজ অনেকেই জানে, এম এস স্বামীনাথন ভারতে তথাকথিত ‘সবুজ বিপ্লব’-এর অন্যতম মূল রূপায়নকারী। এই সবুজ বিপ্লবের ফলে এদেশের খেতখামারে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রিত ব্যাপক রাসায়নিক প্রযুক্ত এক কৃষিব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। বহুজাতিক রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ার্ড জিএম শস্যের ওপর বেশিমাত্রায় নির্ভরশীল এই চাষের ফলে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যাপকভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে, দূষিত হচ্ছে আমাদের জমি এবং নদী, আমাদের শ্রদ্ধেয় চাষিদের বংশানুক্রমিক ও পোষণযোগ্য প্রাকৃতিক চাষের অভ্যাস বিপর্যস্ত হয়ে তারা আত্মঘাতী পথে পা বাড়িয়েছে। আমরা মনে করি, স্বামীনাথনের মতো লোকেদের প্রণীত কৃষিনীতিসমূহ দেশজুড়ে চাষিদের হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তারা বেশি বেশি একশস্য চাষ, অধিক ফলনশীল প্রজাতির বীজ এবং নির্মম কৃষি-কর্পোরেশনগুলির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই সর্বনাশা পথ থেকে তাদের ফেরার আর কোনো উপায় নেই।
এটা খুবই দুঃখজনক যে এই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অতীতে ভবিষ্যদ্‌দ্রষ্টা কৃষক মাসানোবু ফুকুওকা-কে প্রাকৃতিক চাষ ও পোষণযোগ্য কৃষিতে তাঁর অবদানের জন্য এই দেশিকোত্তম সম্মান জানানো হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য, স্বামীনাথনের ভাবনা এবং তাঁর অনুসারী নীতিপ্রণেতাদের কার্যক্রম স্পষ্টভাবেই কর্পোরেট মুনাফা ও লোভের উদ্দেশ্যে পরিচালিত। বিশ্বভারতীর সিদ্ধান্তের ফলে দেশিকোত্তম সম্মান এবং রবীন্দ্রনাথের ভাবনাচিন্তার অমর্যাদা হল। এর ব্যাপক নিন্দা করা আবশ্যক।
মনীষা ব্যানার্জি, পীযূষ মুখার্জি, শৈলেন মিশ্র, সামসুল আলম, মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ।
পরে এই প্রতিবাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন প্রাকৃতিক চাষের কাজে যুক্ত ভরত মানসাটা, গায়ত্রী কৃষ্ণমূর্তি, রীনা কামাথ, পরিবেশকর্মী আনন্দ লি তান এবং মন্থন সাময়িকীর বন্ধুরা।
সবুজ বিপ্লবের রূপকার স্বামীনাথনকে বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম দেওয়ার প্রতিবাদপত্র, ৩০ এপ্রিল