- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

অনাবৃষ্টি, লোডশেডিং, লো-ভোল্টেজ — শিবেশ্বর গ্রামে বোরো চাষে সঙ্কট

মুর্শিদ আলি আলম, শিবেশ্বর, ৩০ এপ্রিল#

২০১১ সালের ফাইল ছবি রামজীবন ভৌমিকের তোলা।
২০১১ সালের ফাইল ছবি রামজীবন ভৌমিকের তোলা।

গ্রামের নাম শিবেশ্বর। কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা থেকে গীতালদহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেই সাত কিমি জুড়ে পাবেন ওকড়াবাড়ি অঞ্চল। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চেপে পূর্ব দিকে তিন কিলোমিটার গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন শিবেশ্বর গ্রামে। গ্রামটি পূর্ব পশ্চিমের তুলনায় উত্তর দক্ষিণে বেশ লম্বা। এই গ্রামের মাঝখান দিয়ে একটি পাকা রাস্তা গ্রামটিকে পাশ্ববর্তী বাজারের সঙ্গে যুক্ত করেছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী। এখানে একদিকে যেমন স্বচ্ছল এবং মাঝারি পর্যায়ের কৃষকরা রয়েছেন, তেমনি ভিনদেশে থেকে ফেরত আসা প্রান্তিক চাষিরাও রয়েছেন।
গ্রামের পথ দিয়ে হাটতে হাটতেই আপনার নজরে পড়বে রাস্তার দুধারে বিস্তীর্ণ সবুজ ধানখেত। বিভিন্ন জায়গায় ইলেক্ট্রিক পাম্পের সাহায্যে জলসেচের ব্যবস্থা থাকলেও লোডশেডিং এবং লো ভোল্টেজের সমস্যা এখানকার চাষিদের বড়ো সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বৃষ্টিপাতের অভাব এবং মাত্রাতিরিক্ত গরম গ্রামীন জীবনে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল বোরো চাষে তাদের নানা সমস্যার কথা। পোকার আক্রমণ এবং তার মোকাবিলার জন্য কীটনাশক প্রয়োজন করা হচ্ছে এতে বেড়ে যাচ্ছে চাষের খরচ। তাছাড়া লো ভোল্টেজও লোডশেডিঙের কারণে সময়মত পরিমাণমত জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। গ্রামের এক প্রান্তিক চাষি ক্যাতা মিঁয়া জানালেন, ণ্ণহামরা দুই বিঘা জমি লিজ নিয়া চাষ করছি। উয়াতে বিঘা প্রতি ছয় মন করি ধান জমির মালিকোক দেওয়া নাইগবে। তার উপরা আবার পানির দাম দেওয়া নাগে বিঘা প্রতি এক হাজার টাকা করি। আবাদ করি শ্যাষম্যাশ দেখা যায় উয়াতে লাভে হয় না।’
আরেকজন কৃষক তমিজউদ্দিন মিঁয়া জানালেন, ণ্ণএবারের খরা এবং ভোল্টেজ কম থাকার কারণে হামরা জমিত ঠিকঠাক পানি দিবার পাই না। সময়মতো পানি না পাওয়ায় রোগবালাই-এর আক্রমণটা বেশি দ্যাখা যাবার নাইগছে। বোরো চাষে এবার তেমন কিছু সুবিধার হবার নয়’।
বিভিন্ন জাতের উচ্চফলনশীল ধান যা সহজে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে, চাষ করেছে শিবেশ্বর গ্রামের কৃষকরা। সেগুলির মধ্য্যে ভিত্তি-২৮, নারিয়াচোদ্দ, হীরা উল্লেখযোগ্য। এই উচ্চফলনশীল ধানগুলি বিঘা প্রতি সাধারণত কুড়ি থেকে পঁচিশ মন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু এবারের এই প্রাকৃতিক অসহযোগিতা, বিদ্যুতের সমস্যা, রোগপোকার আক্রমণ সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যে সহায়ক নয় তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত এই এলাকার চাষিরা।