- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

সরকারি বাহিনীর গুলিতে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর বিরুদ্ধে দেশজোড়া আন্দোলনের ডাক দিলেন সুনীলম

 বঙ্কিম, কলকাতা, ৩০ মার্চ#

ণ্ণবিচারে আমার যাবজ্জীবন হোক আর ফাঁসিই হোক, কোনও ব্যাপার না। সেদিনের আন্দোলনে যে গরীব নিরপরাধ কৃষকরা পুলিশের গুলিতে মারা গেছিল এবং আহত হয়েছিল। তাদের জন্য বিচার শুরু হোক।’ এই কথাই আদালতে বলেছিলেন সুনীলম। গত ২৩ মার্চ ভগৎ সিং-এর ফাঁসির দিনে তাঁর বক্তব্যকে স্মরণ করে সুনীলম কলকাতায় ইস্ট লাইব্রেরি হল-এ গণ আন্দোলনের কর্মীদের সাথে একান্তে তাঁর কথাবার্তা বলছিলেন। তিনি বললেন, স্বাধীনতার পর দেশের প্রায় চুরাশি হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে সরকারি বাহিনী। এর বিচার শুরু হোক। এ বিষয়ে দেশজোড়া এক আন্দোলন শুরু হওয়া দরকার। এক সময় রামমনোহর লোহিয়া তার মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন পুলিশের গুলিতে দুই নাগরিকের হত্যার প্রতিবাদে। তিনি বলছিলেন, পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর গুলি করার অধিকারটা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে হবে।
তিনি জানালেন, একটা কথা পরিষ্কার জেনে নেওয়া দরকার, তাকে যে অভিযোগে যাবজ্জীবন জেল দেওয়া হয়েছে তার একটিও কোর্টে প্রমাণিত হয়নি। তবুও এমন এক অদ্ভুত রায় আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার নগ্ন রূপকে প্রকাশ করেছে। আদালতে তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তাঁর ভিত্তিতে তার ওপর আদালত অবমাননার অভিযোগও আনা হয়।
সুনীলমের অভিযোগ, সরকার এভাবেই মিথ্যে মামলায় দেশের বিভিন্ন গণ আন্দোলন কর্মীদের ফাঁসায়। এই নিয়ে দেশব্যাপী একটা সমন্বিত প্রয়াস শুরু করতে চলেছেন সুনীলম ও তার সহযোগীরা (এই বিষয়ে যোগাযোগ করার ইমেল sunilam_swp@yahoo.com)। তাঁর কথায়, অনেক মানবাধিকার সংগঠন বিবৃতি দিচ্ছে বটে, কিন্তু বাস্তবে আদালতে প্রতিদিনকার লড়াইটা বেশ কঠিন এবং সেখানে সাহায্য সহযোগিতার ক্ষেত্রটাও তত প্রশস্ত নয়। অনেক টাকার ব্যাপার।
তিনি একশ’ আঠারো দিন জেলে কাটিয়েছেন। পরাধীন দেশেও অনেক দেশপ্রেমিক মানুষ জেল ব্যবস্থার সংস্কারের কথা বলে গেছেন। কিন্তু তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা, জেল আজও ভয়াবহ নরক। তিনি জেলের অভিজ্ঞতা নিয়ে জেলের ডায়রি প্রকাশ করতে চলেছেন। জেলে থাকাকালীন বিভিন্ন বন্ধুবান্ধবরা তাঁকে যেসব বই পত্তর দিয়েছিলেন, তা-ও তাঁর বিকল্প সমাজচিন্তাকে সুদৃঢ় করেছে। এবং জেলে তাঁর অনশন আন্দোলনের মতো বর্ণময় অভিজ্ঞতার কথাও জানালেন।
মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায় একাধিকবার নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে সুনীলম বলছিলেন, তাঁর এলাকার মানুষ জোর করেই তাঁকে ভোটে দাঁড় করান এবং ভোট দিয়ে তাঁকে বিধানসভায় পাঠায়। তিনি খুব সামান্য পয়সাই খরচ করতে পেরেছিলেন ভোটের জন্য। পরবর্তীতে তাঁকে ভোটে হারানোর জন্য ওই কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ করেছিল বিরোধী প্রার্থী। তাঁর মত, ভোট এখন টাকা আর গুণ্ডাগার্দির বিষয় হয়ে গেছে। কথোপকথন পর্বে এক যুবক বন্ধু এত অত্যাচার সত্ত্বেও তাঁর সদাহাস্যময় উপস্থিতির জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট বললেন, এটা দৃষ্টিভঙ্গীর বিষয়, আমরা বিকল্প সমাজব্যবস্থা চাই কি না তার প্রশ্ন।