- সংবাদমন্থন - https://songbadmanthan.com -

উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ে ভাগীরথী-অলকানন্দার জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির দায় খতিয়ে দেখতে বলল সুপ্রিম কোর্ট

স্যানডর্প-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে, ১৪ আগস্ট#

জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের টানেলের মুখ। ছবি শমীক সরকার।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের টানেলের মুখ। ছবি শমীক সরকার।

১৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ উত্তরাখণ্ডে অলকানন্দা নদীর ওপর ৩৩০ মেগাওয়াটের শ্রীনগর হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টের কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে। কিন্তু সেই সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার রায়ের মধ্যেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত উত্তরাখণ্ডের সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপারে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে। অলকানন্দা এবং ভাগীরথী নদী অববাহিকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির পরিবেশ তথা অন্যান্য বিষয়গুলির ওপর প্রভাব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবেশ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে রুরকি আইআইটি থেকে একটি জরিপ করা হয় ২০১১ সালে। সেই সমীক্ষার রিপোর্টটি খুব একটা দরের নয়, জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট —

‘আমরা রিপোর্টটি পড়েছি … ওতে বাঁধ নির্মাণ, টানেল তৈরি, ব্লাস্টিং, পাওয়ার হাউস তৈরি, ভাঙা পাথর কোথায় ফেলা হবে, খনন, জঙ্গল কেটে ফেলা প্রভৃতির ফলে অলকানন্দা, ভাগীরথী এবং সামগ্রিকভাবে গঙ্গার মতো পবিত্র নদীর অববাহিকার ওপর কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে কোনো সামগ্রিক, গভীর সমীক্ষা করা হয়নি।’

রায়ের কার্যকরী অংশে কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেমন :

১) সুপ্রিম কোর্ট ফের কোনো নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার উত্তরাখণ্ডে আর কোনো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে পরিবেশ ছাড়পত্র দিতে পারবে না।
২) কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক রাজ্য সরকার, ভারতের বন্যপ্রাণ সংস্থা, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি সংস্থা তৈরি করে তাদের মাধ্যমে একটি বিস্তারিত সমীক্ষা চালাতে বলেছে, বিষয় : চালু বা তৈরি হতে থাকা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির পাহাড়ের পরিবেশ ধ্বংসে ভূমিকা কতটা এবং ২০১৩ সালের জুন মাসের উত্তরাখণ্ডের ট্র্যাজেডিতে এদের দায় কতটা।
৩) ভারতের বন্যপ্রাণ সংস্থা তার রিপোর্টে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ২৪টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ভাগীরথী ও অলকানন্দা নদী অববাহিকার জৈব বৈচিত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করছে — এ বিষয়টা পরিবেশ মন্ত্রক খতিয়ে দেখুক।
৪) উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ কোর্টকে একটি রিপোর্ট দিয়ে জানাক, তাদের বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে কি না এবং থাকলে তা কীভাবে কাজ করেছে সাম্প্রতিক উত্তরাখণ্ড বিপর্যয়ে।
এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরাখণ্ডে নদীবাঁধ, বৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের লাগাতার বিরোধিতা করে আসা অসরকারি সংগঠন ‘স্যানডর্প’ অবিলম্বে প্রস্তাবিত ২৪টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, এবং পরিবেশ ছাড়পত্র পেয়ে যাওয়া ৩০০ মেগাওয়াটের ‘অলকানন্দা বদ্রীনাথ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প’ এক্ষুনি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে।